EN
আরও পড়ুন
প্রকৃতি ও সুরক্ষা
বিজ্ঞানের উপনিবেশবাদ ও তার দেশী তাবেদারেরা -২
প্রকৃতি ও সুরক্ষা
বিজ্ঞানের উপনিবেশবাদ ও তার দেশী তাবেদারেরা -১
ধর্ম ও দর্শন
শহুরে শিক্ষিত দালালদের শক্তিশালী করার কৌশল
ধর্ম ও দর্শন
JadeWits Technologies Limited
অনুসন্ধান

এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট এআই ১৭১ দুর্ঘটনা

বোয়িং এর 'মোর-ইলেকট্রিক' ডিজাইন সমস্যা

গত ১২ জুন, ২০২৫ আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টেকঅফের পরপরই এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট এআই ১৭১ দুর্ঘটনায় পতিত হয় যেটি ছিল একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান। লন্ডন গ্যাটউইকগামী এই ফ্লাইটটি মেঘানী নগর আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়, যার ফলে কমপক্ষে ২৬৯ জন নিহত হয়, যার মধ্যে ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু-এর ২৪১ জন এবং মাটিতে মেডিক্যাল ছাত্ররা সহ ২৮ জন, একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী বৃটিশ নাগরিক বিশ্বাস কুমার রমেশ।

বিমান বিশেষজ্ঞ ও দুর্ঘটনা বিশ্লেষকদের মধ্যে ওই দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে নানা আলোচনা ও বিতর্ক চলছে। দুইটি ইঞ্জিনই উড্ডয়ন ক্ষমতা সরবরাহে অক্ষম বা বন্ধ হয়ে যাওয়া, টেকঅফের সময় বিমানের ওজন ও বায়ুর উচ্চ তাপমাত্রা অনুযায়ী ফ্ল্যাপ (পাখার বিস্তৃতি) সঠিক ভাবে সেট না করা, ল্যান্ডিং গিয়ার না তোলা, বিমানের ওজন হিসাব করতে ভুল করা, ভুল গ্রেডের জ্বালানি নেয়া, বিমান চালকদের ভুল করে ল্যান্ডিং গিয়ার না তুলে ফ্ল্যাপ কমিয়ে দেয়া, জ্বালানি সরবরাহ নলে বায়ু বা বাষ্প জমা, পাখির সাথে সংঘর্ষ এসব নিয়ে আলাপ চলছে এমনকি এটা বাংলাদেশী, রোহিঙ্গা এবং তুর্কি সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ড হতে পারে বলেও অনেকে সন্দেহ করছে যারা নাকি উক্ত বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের সাথে জড়িত ছিল।

বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ার কারণ নিয়ে সারা দুনিয়ার নানা দেশের অভিজ্ঞ বৈমানিকরাও তাদের ধারণা তুলে ধরেছেন। প্রথম দিকে তারা বিমান চালকদের ভুল করে ল্যান্ডিং গিয়ার না তুলে ফ্ল্যাপ কম রাখা এটার উপরে জোর দিলেও পরবর্তীতে আরো পরিষ্কার একটি ভিডিও প্রকাশিত হলে ফ্ল্যাপ কম থাকার বিষয়টা বা বিমান চালকদের ভুল এই ধারণা থেকে সরে এসেছেন। এর সাথে স্পষ্ট হয়েছে বিমানের র‍্যাম এয়ার টারবাইন (RAT) ডিপ্লয় হবার বিষয়টা। এর ফলে অভিজ্ঞ পাইলটরা আবার সেই স্কয়ার ওয়ান বা দুই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ধারণায় ফিরে গেছেন। কিন্তু এত দ্রুত কেন দুটো ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে যাবে তার কোন যুক্তি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। চলন্ত বিমানের ইঞ্জিন যদি বাজে জ্বালানি বা পাখির আঘাতে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ভিডিওতে ইঞ্জিনের পেছনে স্ফুলিঙ্গ বা ধোঁয়া দেখা যাবার কথা সেগুলোর কোনটাই দেখা যায়নি। বোয়িং ৭৮৭ এর অভিজ্ঞ পাইলটরা বলেছেন বিমানটি উড্ডয়নের জন্য চাকা ঘোরা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ উচ্চতায় উড্ডয়ন পর্যন্ত সব কিছু সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিল।

আপনারা অনেকেই জানেন যে আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স বিশেষজ্ঞ। অপরদিকে বিমান সম্পর্কে অনেক ছোট বেলা থেকেই আমার বিশেষ আগ্রহ আছে। একজন ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স বিশেষজ্ঞ হিসাবে অত্যাধুনিক বিমান বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার আমাদের কাছে একটি বিশেষ গুরুত্ব দাবী করে। তার কারণ হল এই বিমানটি একটি নতুন ডিজাইন ফিলসফি অনুসরণ করে ডিজাইন করা হয়েছে যেটিকে বোয়িং নাম দিয়েছে 'মোর-ইলেকট্রিক' ডিজাইন। একজন ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স বিশেষজ্ঞ হিসাবে বিমানে এই ফিলসফি আমার পছন্দ নয়। বৈদ্যুতিক সিস্টেমের সমস্যা হল এটা অকস্মাত চরম ও সর্বব্যাপী বিপর্যয়ের ঘটনা বা ক্যাটাস্ট্রফি ঘটিয়ে ফেলতে পারে। সারা দেশের গ্রিড ফেইল করলে যেমন একসাথে সর্বত্র বিদ্যুৎ চলে যায়। এমনকি সবগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। ধারণা করুন 'মোর-ইলেকট্রিক' ডিজাইনের একটি বিমানে উড্ডয়নের সময় এমন ‘গ্রিড ফেইল’ করলে কি ঘটতে পারে।  

'মোর-ইলেকট্রিক' ডিজাইনের বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার একটি অত্যাধুনিক বিমান, যেখানে অনেকগুলো প্রচলিত নিউম্যাটিক (বায়ু চাপ চালিত) এবং হাইড্রোলিক (তরল চাপ চালিত) সিস্টেমের পরিবর্তে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির উপর নির্ভর করা হয়েছে। এটি 'মোর-ইলেকট্রিক' বিমান হিসেবে পরিচিত, কারণ এর ফ্লাইট কন্ট্রোল, হাইড্রোলিক পাম্প, এবং এমনকি ইঞ্জিন নিয়ন্ত্রণও বৈদ্যুতিক শক্তির উপর নির্ভরশীল। বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ার হাইড্রোলিক শক্তিতে উঠা নামা করলেও তার পাম্প চালানোর জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকা লাগবে। এমনকি ল্যান্ডিং গিয়ার হাইড্রোলিক হলেও ল্যান্ডিং গিয়ারের দরজা খুলতে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাগবে।

বিমানের টেকঅফ, উড্ডয়ন ও ল্যান্ডিং এর নানা কাজ করার জন্য নিউম্যাটিক এবং হাইড্রোলিক সিস্টেমগুলোর বিনিময়ে বিমানটিকে আরো বেশি বিদ্যুৎ নির্ভর করা হয়েছে এর উৎপাদন খরচ, পরিচালন খরচ ও ওজন কমাতে যাতে জ্বালানি সাশ্রয় হয়। কারণ নিউম্যাটিক বা হাইড্রোলিক সিস্টেমগুলোর চেয়ে বৈদ্যুতিক সিস্টেমগুলো ওজনে হালকা আকারে ছোট ও দামে কম এবং যার রক্ষণাবেক্ষণ সহজ। কিন্তু এর সমস্যা হল বিমানে কোন না কোন ভাবে ভাল পরিমান বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকতেই হবে।  

এই বিদ্যুৎ নির্ভরতার জন্য বিমানটিতে বহুমাত্রার বিকল্প ব্যবস্থা (redundancy) রাখা হয়েছে। বোয়িং ৭৮৭-৮ এর "মোর-ইলেকট্রিক" ডিজাইনে অবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য চারটি ভেরিয়েবল ফ্রিকোয়েন্সি স্টার্টার জেনারেটর (VFSG) যা প্রতি ইঞ্জিনে দুটি করে, দুটি অক্সিলিয়ারি পাওয়ার ইউনিট (APU) স্টার্টার জেনারেটর (ASG), এবং ব্যাকআপ পাওয়ারের জন্য দুটি লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি প্যাকের উপর নির্ভর করে। 

এছাড়া র‍্যাম এয়ার টারবাইন (RAT), যা একটি ছোট প্রপেলার লাগানো ডিভাইস, তিনটি পরিস্থিতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিমানের বাইরে স্থাপিত হয় সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক বিপর্যয়, সম্পূর্ণ হাইড্রোলিক বিপর্যয়, বা দুইটি ইঞ্জিনই অকার্যকর হয়ে গেলে। যান্ত্রিক কারণে দুইটি ইঞ্জিনই অকার্যকর খুবই বিরল তবে পাখির ধাক্কা, ভুল জ্বালানি, জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়া, জ্বালানি সরবরাহ পাম্পের সমস্যা এসব কারণে দুইটি ইঞ্জিনই অকার্যকর হতে পারে।

'মোর-ইলেকট্রিক' ডিজাইনের বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারে প্রতিটি ইঞ্জিনে যে দুটি করে ভেরিয়েবল ফ্রিকোয়েন্সি স্টার্টার জেনারেটর (VFSG) রয়েছে সেটি ২৩৫ ভোল্ট এসি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে যা অন্য বিমানে একটি ইঞ্জিনে একটি করে থাকে। এগুলো কোন কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ না করতে পারলে বিকল্প অক্সিলিয়ারি পাওয়ার ইউনিট (APU) এবং লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ব্যাকআপ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এই সবগুলো ব্যবস্থা কাজ না করলে র‍্যাম এয়ার টারবাইন (RAT) স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিপ্লয় হয়। এই জটিল বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা বিমানটিকে দক্ষ করে তুললেও, এটি বৈদ্যুতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়ায় এবং বিমানের বিদ্যুৎ পরিচালন ব্যবস্থা বা বাস সিস্টেমে যদি কোন সমস্যা হয় তখন সকল ব্যবস্থা একসাথে অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।

বোয়িং ৭৮৭ মোর ইলেকট্রিিক ডিজাইন
যখন কোন বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় অনেকগুলো বিদ্যুৎ উৎস ও অনেকগুলো লোড থাকে তখন একটি জটিল বিদ্যুৎ বিতরন ও স্যুইচিং ব্যবস্থা থাকতে হয় যেটা যে কোন বিদ্যুৎ উৎসের সাথে যে কোন লোডের সংযোগ করে দিতে পারে। এটাকেই বাস এবং বিতরণ প্যানেল বলা হয়। বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানে মোট ছয়টি মুখ্য ইলেকট্রিক্যাল বাস থাকে। দুটি প্রধান এসি বাস যেমন বাম এসি বাস (L AC) ও ডান এসি বাস (R AC), দুটি প্রধান ডিসি বাস যেমন বাম ডিসি বাস (L DC) ও ডান ডিসি বাস (R DC), এবং দুটি এসেনশিয়াল বাস যেমন এসি এসেনশিয়াল বাস (AC ESS) ও ডিসি এসেনশিয়াল বাস (DC ESS)। এই বাসগুলো বিমানের বিভিন্ন লোড যেমন ফ্লাইট কন্ট্রোল, এভিওনিক্স, ফুয়েল পাম্প, কেবিন প্রেসারাইজেশন, ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বৈদ্যুতিক ডিভাইসের সাথে সরাসরি সংযুক্ত থাকে।

প্রতিটি এসি বাস বিদ্যুৎ পায় সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনে থাকা ইন্টিগ্রেটেড ড্রাইভ জেনারেটর (IDG) থেকে। বিমানের দুই ইঞ্জিনের প্রতিটিতে একটি করে IDG থাকে, যা এসি পাওয়ার তৈরি করে নিজ নিজ এসি বাসে সরবরাহ করে। এছাড়াও, প্রত্যেক এসি বাস থেকে বিদ্যুৎ কনভার্টারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ডিসি বাসে দেওয়া হয়।

ব্যাকআপ হিসেবে থাকে অক্সিলারি পাওয়ার ইউনিট (APU), যেটা চালু হলে উভয় এসি বাসে বিদ্যুৎ দিতে পারে। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাকআপ হলো র‍্যাম এয়ার টারবাইন (RAT), যা শুধু জরুরি অবস্থায় বেরিয়ে আসে এবং AC ESS ও হাইড্রোলিক ব্যাকআপ চালু রাখে। এর বাইরে, বিমানে দুটি লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি থাকে, যেগুলো ডিসি ESS বাস ও হট ব্যাটারি বাস চালু রাখে যখন অন্য সব উৎস ব্যর্থ হয়।

বোয়িং ৭৮৭ পাওয়ার ও বাস সিস্টেম
বাসগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ স্থানান্তরের জন্য থাকে বাস টাই কানেক্টর (BTC), যেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয় যখন একটি বাস ব্যর্থ হয়। যেমন, যদি বাম এসি বাস ব্যর্থ হয়, তাহলে ডান এসি বাস তার BTC-এর মাধ্যমে উভয় দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে, নির্দিষ্ট ক্ষমতা সীমার মধ্যে। তবে একযোগে উভয় এসি বাস ব্যর্থ হলে, যেমন উভয় IDG ব্যর্থ হওয়া, বা জেনারেটর কন্ট্রোল ইউনিট (GCU) বা বাস পাওয়ার কন্ট্রোল ইউনিট (BPCU)-এর সফটওয়্যার বা সার্কিট ব্যর্থতা, অথবা একটি সমন্বিত বা একাধিক বাস যন্ত্রাংশের ত্রুটি বা বৈদ্যুতিক তাপে ক্ষতি। এইসব পরিস্থিতিতে যদি APU চালু না হয় বা RAT সময়মতো ডিপ্লয় না হয়, তাহলে বিমানের পাওয়ার সিস্টেম চলে যায় শুধুমাত্র ব্যাটারি পাওয়ারে।

এই ব্যাটারি পাওয়ার শুধু ডিসি ESS Bus ও হট ব্যাটারি বাস চালু রাখতে সক্ষম। এতে শুধুমাত্র সীমিত জরুরি সিস্টেম — যেমন ফুল অথারিটি ডিজটাল ইঞ্জিন কন্ট্রোল (FADEC), স্ট্যান্ডবাই ডিসপ্লে, ফুয়েল ভাল্ব খোলা, এবং কিছু বাতি (ককপিট লাইটিং) সীমিত সময়ের জন্য চালু থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে এসি মোটর ড্রাইভেন ফুয়েল পাম্প (ACMP) চালু হয় না, কারণ সেগুলো শুধুমাত্র এসি বাস থেকে বিদ্যুৎ পায়। আবার, যদিও ইঞ্জিনে থাকা ইঞ্জিন ড্রাইভেন পাম্প (EDP) কাজ করতে পারে, তা তখন শুধুমাত্র গ্র্যাভিটি ফিড বা সাকশনের উপর নির্ভর করে ফুয়েল টানবে, যা বিমানের নাক উঁচু থাকা অবস্থায় বা বিশেষ ফুয়েল ট্যাঙ্ক পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রায়ই পর্যাপ্ত হয় না।

টেকঅফ

এবার আমরা এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ (AI171) এর ১২ জুনের দুর্ঘটনার টাইমলাইনটি দেখি (ভারতীয় মান সময়, IST):

১৩:১৭ পুশব্যাক
১৩:৩১ ট্যাক্সি শুরু
১৩:৩৮:০০ টেকঅফ ক্লাইম্ব উচ্চতা ০ ফুট: 
১৩:৩৮:১০  টেকঅফ ক্লাইম্ব উচ্চতা ১৫০ ফুট, সম্ভাব্য গিয়ার আপের চেষ্টা  
১৩:৩৮:১৫ টেকঅফ ক্লাইম্ব উচ্চতা ২৫০ ফুট ADS-B সংকেত বন্ধ 
১৩:৩৮:২০ সর্বোচ্চ উচ্চতা ৬২৫ ফুট:, টেকঅফের ২০ সেকেন্ড পর
১৩:৩৮:২৫ RAT স্থাপন ও মে ডে কল:, টেকঅফের ২৫ সেকেন্ড পর
১৩:৩৮:৫৭ ক্র্যাশ, মে ডে কলের ৩২ সেকেন্ড পর।

দেখা যাচ্ছে যে ফ্লাইটটি ভারতীয় সময় দুপুর একটা বা ১৩:১৭ তে পুশব্যাক করে ট্যাক্সি শুরু করে ১৩:৩৮:০০ মিনিটে টেকঅফ ক্লাইম্ব শুরু করে। ১০ সেকেন্ড পর তার গিয়ার আপ করে ফেলার কথা কিন্তু সেটা করা হয়নি যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিডিওতে উড়ন্ত বিমানের চাকা বা গিয়ারের যে দৃশ্য দেখা যাচ্ছ সেটাতে দেখা যাচ্ছে যে না ওঠানো গিয়ার যেভাবে থাকার কথা (টেইল গিয়ারের সামনের চাকা উপরে পেছনেরটা নিচে যেন বিমানটি মিস অ্যাপ্রোচ হলে বা উড়তে না পারলে আবার সঠিকভাবে রানওয়েতে নেমে আসে) সেভাবে ছিল না। ছিল গিয়ার ওঠানোর সময় যেমন থাকার কথা সেরকম। এর অর্থ হচ্ছে গিয়ার ওঠার চেষ্টা করেছিল কিন্তু সেটা ওঠেনি। 

যে কোন বিমান যখন টেকঅফ বা ল্যান্ডিং করে তখন তার বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রয়োজন হয় সবচেয়ে বেশী। বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার 'মোর-ইলেকট্রিক' ডিজাইন হবার ফলে এই বিদ্যুৎ লাগে আরো বেশি। এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট AI171 দুর্ঘটনায় পতিত হবার আগে যখন টেকঅফ শুরু করে প্রথম ১০ সেকেন্ডে তার প্রচুর বিদ্যুৎ লাগার কথা চলতে থাকা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, চাকা বা গিয়ার ওঠানোর বৈদ্যুতিক ও হাইড্রোলিক ব্যবস্থা ও আরো নানা বৈদ্যুতিক ও হাইড্রোলিক ব্যবস্থা কার্যকরী হবার জন্য।

বোয়িং ৭৮৭ এর বিদ্যুৎ চাহিদা (ধরাণাকৃত)  
এখন আমার যেটা মনে হয় বিমানটি যখন টেকঅফ করার পরেও সব কিছু স্বাভাবিক ছিল। তার পর ১৫০ ফুট উচ্চতা ও ১০ সেকেন্ডের মধ্যে গিয়ার ওঠানোর নির্দেশ দিলে তার বৈদ্যুতিক চাহিদা বেড়ে গেলে বিমানটির মেইন এসি পাওয়ার বাস সিস্টেমে বিপর্যয় ঘটে। এই মেইন এসি বাস সিস্টেমে বিপর্যয়ের দুটি কারণে হতে পারে। সম্ভাব্য কারণ মনে হচ্ছে প্রধান পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন প্যানেল বা দুটি মেইন বাস একসাথে ফেইল করা। বৈদ্যুতিক বাস বা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন প্যানেলে শর্ট সার্কিট বা এক সাথে ঘটা একাধিক ত্রুটি বা স্যুইচিং ল্যাচ সমস্ত বৈদ্যুতিক সিস্টেম বন্ধ করে দিতে পারে। বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের দুটি এসি বাস বন্ধ হয়ে গেলে সাথে সাথে ব্যাটারী চালিত অক্সিলারি বিদ্যুৎ ব্যবস্থা (APU) চালু হয়। ব্যাটারী চালিত অক্সিলারি বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লোড অনুসারে মাত্র কয়েক মিনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে টেকঅফের সময় সেটা মিনিটেরও কম হতে পারে। ব্যাটারী চালিত অক্সিলারি বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চলা অবস্থায় সাধারণত তেল চালিত অক্সিলারি বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু হয় যেটা চালু হতে ৯০ সেকেন্ডের মত সময় লাগে। তবে সেটা চালু হতে হলে তার বাতাস আগমনী দরজা খোলা থাকতে হয়। সেটা চালু না হলে র‍্যাম এয়ার টারবাইন (RAT) স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিপ্লয় হয় যেটি প্রয়োজনীয় জরুরী বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।

এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট এআই ১৭১ দুর্ঘটনায় পতিত হবার আগে দেখা যায় তার গিয়ার একটু উঠে আটকে গেছে। তার পর র‍্যাম এয়ার টারবাইন (RAT) স্বয়ংক্রিয়ভাবে (অথবা ম্যান্যুয়ালি) ডিপ্লয় হয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে বিমানটিতে সব রকম বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। 

আর একটি বিষয় হল কোন কারণে যদি বিমানটির দুটো ইঞ্জিন একসাথে বন্ধ হয়ে যায় তাহলেও বিমানটির একই বিদ্যুৎ বিপর্যয় হবে। এখন প্রশ্ন হল কোন কারণে দুটো ইঞ্জিন একসাথে বন্ধ হবার ফলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বন্ধ হয়েছে নাকি মেইন এসি বাস ফেইল করার ফলে বিমানটির দুটো ইঞ্জিন একসাথে বন্ধ হয়েছে। এটি বুঝতে গেলে আমাদের বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা কিভাবে কাজ করে সেটা দেখতে হবে।
 
বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রতিটি ইঞ্জিনে দুটি করে পাম্প আছে। একটি হল বৈদ্যুতিক (ACMP) যেটা মেইন এসি বাস থেকে চলে যা বাম ও ডান এসি বাস থেকে বিদ্যুৎ পায়। আর একটি ইঞ্জিনের সাথে লাগানো যেটি ইঞ্জিন চালিত পাম্প  (EDP) যেটি ইঞ্জিন চালু থাকলে সেটি জ্বালানি টেনে নিতে পারে। ভুমিতে ইঞ্জিন চালু হলে মেইন এসি বাস থেকে বৈদ্যুতিক পাম্প জ্বালানি ইঞ্জিনে সরবরাহ করে এবং ইঞ্জিন ঘুরলে ইঞ্জিন চালিত পাম্প কাজ করে।   

সাধারণভাবে ট্যাক্সি ও টেকঅফের সময় ACMP ফুয়েল চাপ তৈরি করে ইঞ্জিনে ফুয়েল পাঠায়। একবার ইঞ্জিন চলতে শুরু করলে এবং ইঞ্জিনের গতি স্থিতিশীল হলে, তখন EDP মূল জ্বালানি চাপ সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করে এবং তখন ACMP বন্ধও হয়ে যেতে পারে।

কিন্তু যদি উভয় এসি বাস একসাথে ফেইল করে, তখন ঘটনা ভিন্ন। যদি উভয় এসি বাস ফেইল করে, যদি বাম ও ডান এসি বাস উভয়ই ব্যর্থ হয় তখন সকল ACMP বা বৈদ্যুতিক ফুয়েল পাম্প সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। তখন ইঞ্জিনে ফুয়েল পৌঁছানো নির্ভর করে মাধ্যাকর্ষণ ভিত্তিক প্রবাহ (gravity feed) ও EDP দ্বারা সাকশন।  কিন্তু বোয়িং ৭৮৭ এর ফুয়েল ট্যাঙ্কের বিশেষ গঠনের কারণে বিমান টেক অফ বা ক্লাইম্ব করা অবস্থায়, বা বিমান যদি কিছুটা খাড়া বা নোজ আপ হয় তখন মাধ্যাকর্ষণ ভিত্তিক প্রবাহ কাজ করে না বা যথেষ্ট হয় না। তখন ফুয়েল ট্যাঙ্কে চাপ কমে গেলে, EDP-ও ভালোভাবে ফুয়েল টানতে পারে না। এর ফলে দেখা দিতে পারে ইঞ্জিনে জ্বালানি কমতি বা ফুয়েল স্টারভেশন বা একেবারেই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়া (flameout), যদিও ইঞ্জিন তার পরও কিছুক্ষণের জন্য চলতে পারে লাইনে থাকা প্রবাহিত জ্বালানির জন্য। 

বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের কোন কারণে দুটি ইঞ্জিন একসাথে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্য বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেকটাই অসম্ভব ঘটনা বলেই মনে হয়। দুটি ভিন্ন ইঞ্জিনে একই সাথে সমস্যা দেখা দিতে পারে কিন্তু একই সাথে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা নয়। জ্বালানিতে কোন সমস্যা যেমন ভিন্ন জ্বালানি বা ভেজাল বা মিশ্রিত কিছু থাকলে এত বড় জেট ইঞ্জিন কিছুটা জানান দিয়ে, ধোঁয়া ছেড়ে বা ঝাঁকি দিয়ে বন্ধ হবার কথা। নীরবে ইঞ্জিনের ক্ষমতা হারানো বৈদ্যুতিক ফুয়েল পাম্প বন্ধ হবার কারণেই হবার কথা যেখানে বিমানের নোজ আপ হবার ফলে EDP ফেইলিওর হবারই কথা। আমেরিকার বিমান নিরাপত্তা কতৃপক্ষ এফএএ অতীতে 'মোর-ইলেকট্রিক' বিমানের বৈদ্যুতিক ‘ফুয়েল পাম্প নির্ভরতা’ নিয়ে সতর্কতা জারি করেছিল।

এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট এআই ১৭১ এর ক্ষেত্রে তাহলে কী হয়েছিল? টেকঅফের পর  বিমানটি ১৫০ ফুট উচ্চতায় ওঠে। তারপর  গিয়ার ওঠানোর চেষ্টা। বেশি বিদ্যুত চাহিদায় শব্দ করে উভয় এসি বাস ফেইলিওর, গিয়ার উঠতে গিয়ে আটকে যায়। তখন ব্যাটারী চালিত অক্সিলারি বিদ্যুৎ ব্যবস্থা (APU) চালু হয়, কেবিনের বাতিতে ফ্লিকার হয়। বৈদ্যুতিক ফুয়েল পাম্প  ACMP বন্ধ হয়ে যায়। যেটুকু জ্বালানি পাইপ লাইনে ছিল সেটাতে বিমানটি আরো ৩৫০ ফুট উচ্চতায় ওঠে। কেবল ব্যাটারি পাওয়ার (ডিসি ESS বাস) চালু থাকে,  APU চালু হয় না, ব্যাটারির ওপর নির্ভর করে চলে। ফুয়েল চাপ কমে যায়, EDP যথেষ্ট ফুয়েল টানতে পারে না, ইঞ্জিন ১ ও ইঞ্জিন ২ ধীর গতি বা বন্ধ (flameout) হয়ে যায়। ব্যাটারি পাওয়ার শেষ হয়ে যায়। RAT নেমে আসে হাইড্রোলিক ও পরিমাপ যন্ত্রপাতির জন্য ন্যূনতম পাওয়ার সরবরাহ থাকে। ইঞ্জিন ক্ষমতা কমে গিয়ে বা বন্ধ হয়ে বিমান ধীরে ধীরে নামতে থাকে ও দালানে ধাক্কা খায়।

২০১৫ সালে বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানে, বোয়িং একটি সফটওয়্যার ত্রুটি চিহ্নিত করে যেটা হল জেনারেটর কন্ট্রোল ইউনিট (GCU) সফটওয়্যার বাগ, যেখানে ২৪৮ দিন অবিচ্ছিন্নভাবে চলার পর ইঞ্জিনের জেনারেটর বা GCU-এর অভ্যন্তরীণ কাউন্টার ওভারফ্লো হয়ে পুরো VFSG বন্ধ হয়ে যায়। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিমানের পাওয়ার সাইকেল করার নির্দেশ জারি করেছিল। যদি এয়ার ইন্ডিয়ার VT-ANB বিমানটিতে-তে এই পাওয়ার সাইকেল না করা হয়ে থাকে, তবে এটি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক শক্তি হারানোর কারণ হতে পারে। তবে, এয়ারলাইনের রক্ষণাবেক্ষণ শিডিউল মেনে চললে সাধারণত এই ধরনের দীর্ঘ অবিচ্ছিন্ন অপারেশন ত্রুটি হবার কথা নয়।

এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট এআই ১৭১ এর ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক বাস বা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন প্যানেলে শর্ট সার্কিট বা ত্রুটি সমস্ত বৈদ্যুতিক সিস্টেম বন্ধ করে দিয়েছিল বলেই মনে হয়। এই দুর্ঘটনার দুই ঘণ্টা আগে, দিল্লি থেকে আহমেদাবাদে আগত ফ্লাইট এআই ৪২৩-এর একজন যাত্রী জানিয়েছিলেন যে কেবিনের আলো, সিট-ব্যাক স্ক্রিন, এবং ক্রু কল বাটন কাজ করছিল না। এই সমস্যাগুলি বৈদ্যুতিক সিস্টেমে একটি পূর্ব-বিদ্যমান ত্রুটির ইঙ্গিত দেয়, যা সম্ভবত রক্ষণাবেক্ষণের সময় সমাধান করা হয়নি। এয়ার ইন্ডিয়ার ৭৮৭ ফ্লিটে এর আগেও বৈদ্যুতিক এবং হাইড্রলিক সমস্যার রিপোর্ট ছিল, যার মধ্যে ২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ৩২টি ঘটনা অন্তর্ভুক্ত।

যাই হোক, এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট এআই ১৭১ এর বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটির দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে উপরে যা বলা হল সেটা আমার ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ মাত্র। যেটি বিমানটির একটি নতুন ডিজাইন ফিলসফি অনুসরণ করে ডিজাইন করার ফল বলেই আমার মনে হয় যেটিকে বোয়িং নাম দিয়েছে 'মোর-ইলেকট্রিক' ডিজাইন। তবে আমার ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ অতি স্বল্প তথ্য থেকে একটি অল্প সময়ের সিচুয়েশন এনালিসিস থেকে তৈরি। এটি নিয়ে বিস্তর গবেষণা করা হয়নি। আসলে বিমানটিতে কি ঘটেছে সেটা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিমানের ব্ল্যাক বক্সে থাকা ফ্লাইট ডেটা এবং রেকর্ডেড ককপিট ভয়েস আসলে কি হয়ছিল সেটা প্রকাশ করবে। তবে অফিসিয়াল তদন্ত এমনকি মার্কিন সরকারী তদন্ত সংস্থাও যে অনেক সময় মিথ্যা তদন্ত রিপোর্ট দিয়ে সত্য ধামাচাপা দেয় তার নিদর্শনও আছে। 

ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৮১১ ছিল লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে সিডনিগামী একটি নিয়মিত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। ১৯৮৯ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারী, হনোলুলু ছেড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ফ্লাইটটি কার্গো-ডোর ল্যাচ বিকল হয়ে যায়। ফলে বিস্ফোরক ডিকম্প্রেশনের ফলে দরোজা ভেঙ্গে গিয়ে বেশ কয়েকটি সারি আসন উড়ে যায়, যার ফলে নয়জন যাত্রী নিহত হন। জড়িত বিমানটি ছিল একটি বোয়িং ৭৪৭-১২২। দুর্ঘটনাটিতে মার্কিন সরকারী তদন্ত সংস্থা এনটিএসবি আসল কারণ না খুঁজে গ্রাউন্ড ক্রুর ত্রটি ছিল এই গোঁজামিল রিপোর্ট দেয় কারণ আসল কারণ বের হলে বিমান কোম্পানীর বিপুল ক্ষতি।

ফ্লাইট ৮১১-এর দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন নিউজিল্যান্ডের বাসিন্দা লি ক্যাম্পবেল, যিনি বাড়ি ফিরছিলেন। তার মৃত্যুর পর, তার বাবা-মা কেভিন এবং সুসান ক্যাম্পবেল (পেশায় প্রাক্তন প্রকৌশলী) এনটিএসবি থেকে নথি চুরি করে সেটি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত তদন্ত শুরু করেন। ক্যাম্পবেলদের তদন্তের ফলে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে দুর্ঘটনার কারণ মানুষের ত্রুটি নয় বরং বৈদ্যুতিক সমস্যা এবং বিমানের কার্গো ডোর-ল্যাচিং মেকানিজমের নকশায় ত্রুটি। পরে তারা তাদের তত্ত্ব নিরাপত্তা বোর্ডের কাছে উপস্থাপন করেন। অফিসিয়াল তদন্ত অবশ্যই হবে তবে ব্যক্তিগত তদন্তও চলতে হবে।

Read In English

JadeWits Technologies Limited
সর্বশেষপঠিতনির্বাচিত

আমরা আমাদের সেবা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করি। আমাদের কুকি নীতির শর্তাবলী জানার জন্য অনুগ্রহ করে এখানে ক্লিক করুন। কুকি ব্যবহারের জন্য আপনি সম্মত হলে, 'সম্মতি দিন' বাটনে ক্লিক করুন।