সালমান শাহের আত্মহত্যা – (তার স্ত্রীর ফাসী চাই):
২৭ বছর আগে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের এক জনপ্রিয় নায়ক শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন ওরফে সালমান শাহের মৃত্যু হয়। এই ২৭ বছর প্রতি বছর অন্তত দুই বার, সালমান শাহের জন্ম ও মৃত্যু দিবসে লক্ষ লক্ষ লোক তার স্ত্রী সামিরা হককে গাল মন্দ করে খুনি হিসাবে যদিও পুলিশের বিভিন্ন বিভাগ তিনবার তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে সালমান শাহ আত্মহত্যাই করেছিলেন। সালমান শাহের মৃত্যুর পর যে মামলাটা হয় সেটিও ছিল একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর (ইউডি) মামলা। তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর একে একে থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি, র্যাব, পিবিআই মামলাটির তদন্ত করে। হয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্তও।
সব তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হলেও প্রতিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ার পর পরিবারের আপত্তির (নারাজি) মুখে তদন্ত সংস্থা পরিবর্তন হয়। সালমান কেন আত্মহত্যা করবেন? প্রথম স্বামী সালমান শাহর আত্মহত্যা প্রসঙ্গে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তার স্ত্রী সামিরা বলেন সে ছিল মেন্টালি সুইসাইডাল বাই নেচার বা আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তিত্ব। এর আগেও তিনবার সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। ওদিকে সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী বরাবরই বলে আসছেন, তার ছেলে আত্মহত্যা করেনি, তাকে পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করা হয়েছে।
নিরাপদ সড়ক চাই – (ড্রাইভারদের ফাসী চাই):
৩০ বছর আগে ১৯৯৩ সালে ২২ অক্টোবর নিজ হাতে বিস্কুট বানিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে বান্দরবানে স্বামীর শুটিং সেটে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা এক ট্রাকের ধাক্কায় অকালে প্রাণ হারান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়ক ইদ্রিস আলী ওরফে ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন। সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রীকে হারিয়ে নেমেছিলেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনে। সেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এখনো। এই প্রসঙ্গে ইদ্রিস আলী ওরফে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন ‘জাহানারার মৃত্যুতে আমি মারাত্মক ভেঙে পড়েছিলাম। এতটাই ভেঙে পড়েছিলাম যে ঠিক করেছিলাম, আর কোনো ছবিতে অভিনয় করব না।
সেই সময়ে পাশে এসে দাঁড়ান একজন সিনিয়র সাংবাদিক। তিনি আমাকে বোঝালেন ‘দেখো কাঞ্চন, স্ত্রীকে বাঁচাতে না পারায় তুমি খুবই ভেঙে পড়েছ। তাই হয়তো তুমি এমন চিন্তা করছ, চলচ্চিত্র ছেড়ে দেবে। কিন্তু এটি তো কোনো সমাধান হতে পারে না। হাজার হাজার ভক্ত তোমাকে ভালোবাসে। তাদের মধ্যে অনেকে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। যদি পারো তো তাদের জন্য কিছু করো।’ অন্যদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রীর যে নির্মম পরিণতি হয়েছে, সে রকম পরিণতি বরণ করে নিতে হতে পারে অনেক ভক্তকেও। এসব বিষয় নিয়ে ভাবতে গিয়ে প্রথম ১৫ দিন সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো কথা বলিনি। নিজে নিজে ভেবেছি। আসলে কী করতে যাচ্ছি আমি, কী করা উচিত। একসময় সিদ্ধান্ত নিলাম সড়ক দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার।’
প্রথম দিনের কর্মসূচির স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘প্রথম কর্মসূচির জন্য ডিসেম্বর মাসকে বেছে নিয়েছিলাম। ১৯৯৩ সালের ১ ডিসেম্বর এফডিসি থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত পদযাত্রা বের করি। সেই পদযাত্রায় প্রচুর জনসমাগম হয়েছিল। তবে অধিকাংশ মানুষই যতটা না এসেছিলেন নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে, তার চেয়েও বেশি আমাকে ভালোবেসে। এরপর থেকে যখনই কোনো কর্মসূচির আয়োজন করেছি, সাধারণ মানুষের অফুরান ভালোবাসা পেয়েছি’।
সড়ক নিরাপত্তার দাবিতে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকায় নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে একটি আন্দোলন বা গণবিক্ষোভ হয়। পরবর্তীতে ৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রিসভা একটি খসড়া ট্রাফিক আইন অনুমোদন করে, যে আইনে ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যায় মৃত্যুদণ্ড এবং বেপরোয়াভাবে চালিয়ে কারো মৃত্যু ঘটালে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়; যদিও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বেপরোয়া চালনায় মৃত্যুদন্ড দাবি করেছিল। উক্ত আন্দোলনে ছাত্রদের শ্লোগান ছিল "উই ওয়ান্ট জাস্টিস", "আমার ভাই কবরে, খুনী কেন বাহিরে"
বিডিআর বিদ্রোহ – (শেখ হাসিনা ও ভারতের ফাসী চাই):
১৪ বছর আগে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআরদের একটি দল দ্বারা সংগঠিত হয় একটি সশস্ত্র বিদ্রোহ এবং হত্যাকাণ্ড। বিদ্রোহী বিডিআর সৈন্যরা পিলখানায় বিডিআর সদর দফতর দখল করে বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা ও আরো ১৭ জন বেসামরিক ব্যক্তিতে হত্যা করে। তারা বেসামরিক লোকদের উপর গুলি চালিয়েছিল, তারা অনেক অফিসার এবং তাদের পরিবারকে জিম্মি করেছিল, স্থাপনা ও সম্পদ ভাংচুর করেছিল এবং মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়েছিল।
বিদ্রোহের দ্বিতীয় দিনে বিডিআর ক্যাম্প আছে এমন অন্য ১২টি শহরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল। সরকারের সাথে একাধিক আলাপ-আলোচনার পরে বিদ্রোহীরা অস্ত্র সমর্পণ করে এবং জিম্মিদের মুক্তি দেয় ও অস্ত্র সমর্পণের মধ্য দিয়ে এ বিদ্রোহের অবসান ঘটে।
বিডিআর বিদ্রোহের ১৪ বছর পরে সেই ঘটনা তুলে ধরে সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কর্নেল ফিরোজ রুমে প্রবেশ করেন এবং আমাকে কানে কানে বলেন, পিলখানায় গন্ডগোল হচ্ছে। আপনার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।’
তিনি তখন ওই সভা স্থগিত করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিডিআরের ডিজির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তাঁদের ফোন টানা ব্যস্ত ছিল। সামরিক গোয়েন্দারা তাঁকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে তিনি সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেন। তারা তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করে, যার নামকরণ করা হয় ‘অপারেশন রি-স্টোর অর্ডার’।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘মনে হলো সব পরিকল্পনার অংশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনেকে মনে করে, বিডিআর ডিজি সাহায্যের জন্য আমাকে কল করেছিলেন—এটা সত্য নয়। আমি বিডিআর ডিজিকে ফোন করি এবং আমরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছি, তা ওনাকে জানিয়ে দিই।’
সেদিন সকাল ৯টা ৫৪ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ সম্ভব হয় বলে উল্লেখ করেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যেই তিনি (শেখ হাসিনা) বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় আমি তাঁকে অপারেশনের কথা জানালে তিনি জানতে চান, কতক্ষণ সময় লাগবে ব্রিগেডকে তৈরি করতে? আমি বললাম, সাধারণত ছয় ঘণ্টা লাগে। তবে তাড়াতাড়ি করে দুই ঘণ্টার মধ্যে তৈরি করা যায়।’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা ৪৬ ব্রিগেডকে পিলখানায় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। এক ঘণ্টার মধ্যে তৎকালীন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাকিমের নেতৃত্বে ১০ জন কর্মকর্তা ও ৬৫৫ জন সৈনিক পিলখানার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রিগেডের অগ্রবর্তী দল জাহাঙ্গীর গেট অতিক্রম করে।
তিনি বলেন, আক্রমণ প্রতিহত করতে বিডিআর গেটগুলোর সামনে অস্ত্র মোতায়েন করেছিলেন বিদ্রোহীরা। বেলা ১১টায় ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম গাড়ি পিলখানার মেইন গেটের কাছাকাছি পৌঁছালে বিদ্রোহীরা একটি পিকআপ লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালান। এতে চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। চালকের পাশে বসা একজন গুরুতর আহত হন।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে তাঁর অফিস থেকে বিডিআরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তা সম্ভব হয়নি। হয়তো এর আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।
তৎকালীন লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শামসের ধারণা অনুযায়ী, সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যেই অনেক অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেনাবাহিনীর ব্রিগেড পৌঁছায় ১১টার পরে। কিন্তু ১০টার আগেই ৩৫৫ জন র্যাব সদস্য নিয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন শফিক পিলখানায় পৌঁছেছিলেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে প্রবেশের অনুমতি পাননি। তাঁরা প্রবেশ করলে হয়তো এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না।
কুবলার রস শোকের মডেল:
আপনি যদি কাউকে খুব ভালবাসেন এবং তার সাথে আপনার হঠাৎ বিচ্ছেদ হয়, অথবা বিবাহ নিয়ে সুখী থাকার পর হঠাৎ বিচ্ছেদের নোটিশ পান বা কারো সন্তানের মৃত্যু হয় তখন মানুষ কি প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং কিভাবে শোকগ্রস্থ হয় সেটার একটা প্যাটার্ন রেয়েছে। শোক পরবর্তি পাঁচটি অবস্থা খুঁজে বের করেছেন সুইস-আমেরিকান মনোচিকিৎসক এলিজাবেথ কুবলার রস।
সর্বপ্রথম ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত অন ডেথ এন্ড ডাইয়িং বইয়ে তিনি শোক ও আবেগের পাঁচটি পর্যায়ের একটি মডেলের বিবরণ দিয়েছেন যাকে কুবলার রস মডেল হিসেবে অভিহিত করা হয়। সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের জন্য সংযুক্ত ছবিতে দেখানো কমলা রঙের রেখা অনুযায়ী শোক ও আবেগের এই পাঁচটি পর্যায় হল অস্বীকার (Denial), রাগ (Anger), বিচার বিবেচনা ও মূল্যায়ন (Bargaining), অবসাদ বা হতাশা (Depression) এবং মেনে নেওয়া (Acceptance )। এই মেনে নেওয়ার অর্থ ভূলে যাওয়া নয়, মনে রাখা, প্রকৃতই কি হয়েছিল সেটা বোঝার চেষ্টা করা ও বিচার চাওয়া। সময় চলে গেলেও সেই কথা মনে পড়লেও যারা ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে প্রতিশোধ চায় তারা নিশ্চই মানসিকভাবে সুস্থ নয়।
কেন কোন দুর্বল ও পরনির্ভর মানুষ, যাদের আত্মবিশ্বাস ও আত্মউদ্যম কম এবং যারা নেতিবাচক চিন্তার এবং বিচার বিবেচনায় দুর্বল তারা কুবলার রস মডেলের চতুর্থ পর্যায়, অর্থাৎ অবসাদ বা হতাশা থেকে বের হতে পারে না। সারা জীবনই যেন তারা এটা বহণ করে চলে।
কিন্তু কোন মানুষের যদি এমন মানসিক সমস্যা থাকে যে সে অন্তরে ক্ষোভকে ধারণ করে রাখে, অথবা তার অন্তর বিদ্বেষে পরিপূর্ণ, অথবা সে প্রচণ্ড প্রতিশোধ পরায়ণ, তখন সে কুবলার রস মডেলের দ্বিতীয় পর্যায়, সেই রাগ ও ক্ষোভ থেকে বের হতে পারে না বা সেটিতে স্থায়ী (ফিক্সেটেড) হয়ে যায়। তখন সে তার শোক বা ক্ষতির জন্য কাউকে দায়ী করার জন্য উন্মুখ থাকে এবং প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে তার যে ক্ষতি হয়েছে সেই ক্ষতি অন্যের জন্যও চাইতে থাকে। যার অর্থ লাশের বিনিময়ে লাশ চায় কেউ দায়ী না হলেও কাউকে দায়ী বানিয়ে।
সোশ্যাল মিডিয়া, ফেটিশিজম, ইম্যাজিন্যারি অ্যফেকশন ও মিডিয়া ব্যবসা:
বর্তমানের আধুনিক সমাজে কোটি কোটি মানুষ আছে বাইরে যারা সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করলেও মনে মনে তারা অত্যন্ত বিষণ্ণ, উদাস ও বিরক্ত (বোরড)। এদের মধ্যে একটি বড় দল তাদের এই বিষণ্ণ, উদাস ও বিরক্তিকর জীবনের জন্য কাউকে দায়ী করে ও কাউকে তারা আইডিয়ালাইজ বা আদর্শীকরণ করে। এই আইডিয়ালাইজেশনের মধ্যে আছে পাওয়ার ফেটিশিজমও।
ফেটিশিজম হল কোন কিছুর যে গুণ নাই তার উপর সেই গুণ আরোপ করে তাকে পূজনীয় করে তোলা। আমাদের দেশে রাষ্ট্রপ্রধান বা সামরিক বাহিনী এদের অনেক পূজারী তৈরি হয়ে যায় যেটা আসলে পাওয়ার ফেটিশিজম। খুব নামকরা লোক, ধনী ব্যক্তি বা সিনেমা বা টিভির স্টারদের অনেক প্রেমিক প্রেমিকা তৈরি হয়ে যায় সেগুলো হল ইম্যাজিন্যারি অ্যফেকশন। এই ফেটিশিজম বা ইম্যাজিন্যারি অ্যফেকশনে যারা বাস করে তারা যখন তাদের সেই ইম্যাজিন্যারি আপনজন বা সম্পর্ককে হারায়, তখন কুবলার রস শোকের মডেল কিভাবে কাজ করে? সেটা অবশ্যই সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের শোক প্রকাশের কুবলার রস মডেলের যে পাঁচটি স্তর সেই পথে প্রবাহিত হয় না। সেটি কুবলার রস শোকের মডেলের দ্বিতীয় পর্যায়, যেটি রাগ ও ক্ষোভ সেটিই লক্ষ্য হয়ে যায় যার দাবী হচ্ছে ঘৃণা, প্রতিশোধ ও লাশ।
এই যে মানুষের রাগ ও ক্ষোভ যার দাবী হচ্ছে ঘৃণা, প্রতিশোধ ও লা..শ, সেটি মিডিয়া ও সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। জীবন সম্পর্কে বিষণ্ণ, উদাস ও বিরক্ত বিশাল সংখ্যক মানুষ, যাদের অন্তর বিদ্বেষে পরিপূর্ণ ও যারা প্রচণ্ড প্রতিশোধ পরায়ণ তেমন আবেগপ্রবণ মানুষ এবং মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবসা – এই তিনে মিলে তৈরি হতে পারে শয়তানের চক্র। যে চক্রে পড়ে দেশ আজ চরম সঙ্কটে। এটাই বিগত সরকার পতনের মনোবিদ্যা