দুই হাজার ছয় সালের ঘটনা। দেশি বিদেশী শিক্ষক, বিজ্ঞানী, ফটোগ্রাফার, প্রকৃতিবীদদের নিয়ে বিভিন্ন সময় মাত্র কয়েক দিনের জন্য সুন্দরবন গেলেও অনেক সময় সময়ের অভাবে বা সঠিক পরিকল্পনার অভাবে মন মতো ছবি তোলা যায় না। তাই ঠিক করলাম প্রতি বছর ১০ দিনের একটা ভ্রমণের আয়োজন করব পুর্ব পশ্চিম সুন্দরবন জুড়ে যার নাম দিলাম সুন্দরবন ডাইভারসিটি ট্যুর। সারা দুনিয়া থেকে আসা ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষক, বিজ্ঞানী, ফটোগ্রাফার, প্রকৃতিবীদদের নিয়ে প্রথম ট্যুরটি আয়োজন করে ফেললাম। এ ধরণের ট্যুর অনেক ব্যয় সাপেক্ষ হয়। কিন্তু সুন্দরবনে ট্যুর ব্যবসায় থাকা নানা সুহৃদের সহযোগীতায় আমরা মোটামুটি বহনযোগ্য খরচেই ট্যুরটি আয়োজন করতে পারলাম।
পরবর্তীতে দশ বছর আমরা এটা করে গেছি আরো সুন্দরভাবে পরিকল্পনা করে। এই ট্যুর থেকে আমাদের সবার কাছে সুন্দরবনের নানা অংশের যে ছবি, বৈজ্ঞানিক তথ্য ও অভিজ্ঞতা জমেছে – সেগুলো অসম্ভব মূল্যবান সম্পদ যেগুলো বাংলাদেশ ও ভারত এই দুই দেশের সুন্দরবনের আর কারও কাছে নেই। কয়েক বছর আগে ভারত থেকে সুন্দরবনের ওপর একটি ভাল মানের বই বের হয়েছে, সেটির বেশীরভাগ ছবিই এই ট্যুরগুলো থেকে নেওয়া। ২০১৩-১৫ সালের বিএনপি জামাতের আগুন সন্ত্রাসের সময়ও এই ট্যুর আমরা করতে পরেছি কিন্তু মৌলবাদীদের হোলি আর্টিজেন ঘটনা ও বিদেশী হত্যার ঘটনার পর থেকে এই ট্যুর আর করা সম্ভব হয়নি বিদেশীদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্কতার কারণে। আমিও তাদের আমন্ত্রণ করে কোন ঝুঁকি নিতে চাইনি। কারণ বাংলাদেশে ইতিহাসে যত রাজনৈতিক মিছিল হরতাল ভাংচুরই হোক না কেন, সাধারণ জনগণ, বিশেষ করে বিদেশীরা সন্ত্রাসের লক্ষ্য তার আগে কখনও হয়নি।
এই আয়োজনের একটি ট্যুরে আমরা ঠিক করি পুরো সুন্দরবন, সেই পশ্চিমের ভারতীয় সীমানার কাছে নটাবেকি, হলদেবুনিয়া হয়ে সাগরতীরের মান্দারবাড়িয়া থেকে পূর্বের ডিমের চর, চান্দেশ্বর, সুপতি পর্যন্ত আমরা পুরোটা কাভার করব। ট্যুর বোটগুলো সাধারণত এভাবে পূর্ব পশ্চিম ভ্রমণ করে না। দুটো বিশাল চওড়া নদী পশুর ও শিবসা সুন্দরবনকে তিনভাগে ভাগ করে রেখেছে। তাদের পার হয়ে নানা দিকে ভ্রমণ করার পরিকল্পনা করা সহজ নয় কারণ সুন্দরবনের বেশীরভাগ খাল বা নদীগুলো উত্তর দক্ষিন বরাবর প্রবাহিত। এর সাথে নদী বা খালগুলোর গভীরতা ও নাব্যতা বা নেভিগেবলিটি জানা থাকা চাই যেটা বোটের ড্রাফট (পানির নিচে গভীরতা) সাপেক্ষ। সুন্দরবনে আড়াআড়ি বা ল্যাটারাল ভ্রমণ করতে গেলে জোয়ার ভাটার সাপেক্ষে নানা নদী ও খালের পথ চেনে এমন ব্যক্তি (পাইলট) সাথে নিতে হয়।
খুঁজে পেলাম বন বিভাগে সারা জীবন কাজ করা এক সিনিয়র রিটায়ার্ড পাইলটকে যিনি বন বিভাগের সবচেয়ে বড় ও মর্যাদাপূর্ণ বোট বনরাণীর মাস্টার ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বনে গেলেও তিনি ভ্রমণ করে থাকেন বনরাণীতেই। বৃদ্ধ এই ভদ্রলোক খুবই ভালমানুষ, মিশুক ও সদালাপী। যে কোন খোলা মনের বনকর্মীর মত তিনিও বনকে অন্তরে ধারণ করেন ও অন্য সবার মতই তিনি তাঁর বন জীবনের নানা কাহিনী বলতে আগ্রহী। তাঁকে পেয়ে আমাদের খুব ভাল লাগল আমাদের অ্যাডভেঞ্চারধর্মী যাত্রা পরিকল্পনা শুনে তিনি বললেন কোন সমস্যা নাই, সুন্দরবনের সব পথ তার মুখস্ত।
কোন পথে কিভাবে আমরা যাব সেটা মোটামুটি পরিকল্পনা করেই রেখেছিলাম যেখানে আরও নানা বিষয় হিসাব নিকাশ করতে হয়। যাত্রাপথে বন্যপ্রানীর ছবি তোলার জন্য উপযুক্ত কোন খাল আছে কিনা (বড় নদীতে বন্যপ্রানীর বেশি ছবি পাওয়া যায় না), রাতে থাকার স্থান কোনটা হবে, আবহাওয়ার সাথে চাঁদের কলা এবং সাগরের থেকে দূরত্ব এগুলোও হিসাব করতে হয়। দেখতে হয় মিষ্টি পানির সরবরাহ এবং ডাকাত থেকে নিরাপত্তা ইত্যাদি। ম্যাপ ও জিপিএস সম্পর্কে আমার উৎসাহ, সুন্দরবনের ডিটেইল ম্যাপ এবং গুগল ম্যাপের কল্যাণে আমি ট্র্যাকও তৈরি করে রেখেছি কিভাবে কোন পথ দিয়ে আমরা যাব।
আমাদের মুরব্বি পাইলটের সাথে যাত্রা শুরুর আগের রাত্রে যখন মোটামুটি পথ-পরিকল্পনা আলাপ করলাম, তিনি বললেন কোন সমস্যা নাই যাওয়া যাবে। ভোর বেলা খুলনা থেকে বোট রওনা দিয়ে দিল। সকাল উঠে নাস্তা করে বাসা থেকে বড় কাগজে প্রিন্ট করে নিয়ে যাওয়া আমাদের ট্যুর ট্র্যাক ম্যাপটা যখন খুলে বসলাম তখন বাধল বিপদ। পাইলট আঙ্কেল ম্যাপের ম ও বুঝতে পারে না। চেনা যায়গা কাগজে এ থেকে বি তে এঁকে দেখালেও উনি কিছুই ধরতে পারেন না। অথচ ম্যাপ, কোঅর্ডিনেট, ট্র্যাক আর বিয়ারিং আমার মাথায় আমার অবস্থান আর গন্তব্য সম্পর্কে ধারণা দেয়। আমাদের পাইলট আঙ্কেলের নেভিগেশন হলো চিহ্ন বা ল্যান্ডমার্ক নির্ভর, এই খালের মুখ, ওই জোড়া খাল, এই খাল থেকে বাইর হলে আর একটু উত্তরমুখে চললেই ওই খাল পড়বে এমন।
আমি স্পষ্ট বুঝতে পারলাম সুন্দরবনের জিওগ্রাফি ও নেভিগেশন সম্পর্কে আমাদের দুজনের ভাষা আলাদা। আমার ভাষা হলো স্থানিক বা স্পেশিয়াল (spatial), আর পাইলট আঙ্কেলের ভাষা হলো রৈখিক সম্পর্কের বা লিনিয়ার রিলেশনাল। আমার মাথায় পুরো সুন্দরবনটা একটি দ্বিমাত্রিক স্পেস। যার সাথে ছোট স্কেলে আঁকা ম্যাপ, যেটিও হুবহু একটি দ্বিমাত্রিক স্পেস, সেটা মিলে যায়। নদীগুলো সেই স্পেসের বিভিন্ন স্থানের কানেকটিভিটি। পাইলট আঙ্কেলের মাথায় এই দ্বিমাত্রিক স্পেসটির অস্তিত্বই নেই। তার কাছে পুরো সুন্দরবনের স্থানগুলো একটি সুতো দিয়ে গাঁথা পুঁতির মত। উনার মাথায় আছে সুতো ধরে গেলে কোন পুঁতির পর কোন পুঁতি পাওয়া যাবে। যেটা হলো এক মাত্রিক লিনিয়ার রিলেশনাল সিকোয়েন্স।
আপনার কোন সদ্য বিবাহিত পুরুষ বন্ধু যদি তার নতুন বাসায় আপনাকে দুপুরের খাবার দাওয়াত দেয় যে বাসাটি আপনি চেনেন না। তখন ফোনে যদি ঐ বন্ধুটির কাছে আপনি তার বাসার অবস্থান বা লোকেশনটি জানতে চান, সে সেটা একভাবে আপনাকে বুঝিয়ে বলবে। সেই হিসাবে বেরিয়ে পথ হারিয়ে যদি ঐ বন্ধুকে আবার ফোন করেন এবং সে শাওয়ারে গেছে বলে যদি ঐ বন্ধুর স্ত্রী কলটি রিসিভ করে এবং তার কাছে আপনি আবার ঐ বাসার লোকেশনটি জানতে চান, তখন মেয়েটি সেটা সম্পুর্ন ভিন্নভাবে বলবে। পথ নির্দেশ দিতে পুরুষেরা বলবে মেন রোড থেকে উত্তরে ত্রিশ মিটার যাবা, তারপর পশ্চিমে বাঁক নিয়ে আও দুই’শ মিটার পরে এত নম্বর বাসা। মেয়েটি বলবে মেইন রোড থেকে হাটতে থাকলে একটা ঔষুধের দোকান পড়বে, সেটা পার হয়ে একটা মসজিদের পরে দেখবেন তালগাছওয়ালা একটি সুন্দর বাড়ি। ওখান থেকে আমাদের বাসা দেখা যাবে। এখানে ঔষুধের দোকান, মসজিদ বা সুন্দর বাড়ী অনেকগুলো থাকতে পারে। কিন্তু মেয়েটা বলবে শুধু যেগুলো তার চোখে পড়েছে সেগুলোই।
নারী ও পুরুষের মস্তিস্কের এই স্থানক (spatial) প্রসেসিং আলাদা। মেয়েরা অনেক বেশী লিনিয়ার রিলেশনাল সিকোয়েন্স নির্ভর। আর ছেলেরা স্থানিক। বিশেষ করে বৃহৎ স্থানের ক্ষেত্রে এই তফাৎটা অনেক বেশী। এটা নিয়ে গত ৫০ বছর অনেক গবেষণা হয়েছে এবং এই প্রভেদের কারণ হিসাবে মনে করা হয় বিবর্তনগতভাবে মেয়েরা বাড়ির কাজ ও বাড়ির আশেপাশে তৃণ লতা সব্জী ফল বীজ জ্বালানী কুড়িয়ে জীবনধারণে ব্যস্ত থাকত (গ্যাদারিং)। অপরদিকে ছেলেরা দূর দূরান্তে অচেনা স্থানে শিকারে যেত (হান্টিং)। তাই মেয়েদের মস্তিস্ক ছোট স্থানে অনেক সুক্ষ্ম বা ডিটেইল বিষয় লক্ষ্য করে ও মনে রাখে অপরদিকে ছেলেদের মস্তিস্ক বৃহৎ স্থানের দ্বিমাত্রিক ম্যাপ তৈরি করে স্পেশিয়াল প্রসেসিং এ ভাল। এই কারণে গবেষণায় দেখা গেছে গোলকধাঁধা বা মেইজে প্রবেশ করলে নারী পুরুষ ভিন্নভাবে সেটা থেকে বের হয়। পুরুষেরা স্পেশিয়াল ও মেয়েরা রিলেশনাল পদ্ধতি ব্যবহার করে।
মস্তিস্কে সক্ষমতা থাকলেই হয় না সেটা শিখতে হয় ও চর্চা করতে হয়। কথা বলার ক্ষমতা আমাদের প্রায় সকলেরই আছে কিন্তু ভাষা না শিখে ছোট বেলা থেকেই ইশারা চর্চা করলে মস্তিস্কের ভাষার দক্ষতা কোন কাজে আসে না। আমাদের পাইলট আঙ্কেলেরও তাই হয়েছে। পদ্ধতিগতভাবে নেভিগেশন না শিখে সারা জীবন শুধু হুইলের পাশে বসে দু’পাড় দেখে পথ চিনতে চিনতে তার মস্তিস্ক সেটাতেই স্থবির হয়ে গেছে। পাইলট আঙ্কেলের এই লিনিয়ার রিলেশনাল নেভিগেশন প্র্যাকটিসের ফলে তিনি হয়ত তার কাজ ঠিকমতই করেছেন, কিন্তু পুরো সুন্দরবনের জিয়োগ্রাফি বা টপোলজি সম্পর্কে সার্বিক স্থানিক বা স্পেশিয়াল (spatial), ধারণা তার তৈরী হয়নি।
যে কোন স্থান সম্পর্কে সার্বিক স্থানিক ধারণা তৈরী না হলে সেই স্থানের আকার, আকৃতি ও প্রকৃতি সম্পর্কে আমাদের বিচার বুদ্ধি তৈরী হয় না। বিষয়টি যেমন ভুপ্রকৃতির জন্য সত্য, বিষয়টি আরও সত্য সমাজ ও মানুষকে বোঝার জন্য।
আমার এক প্রকৌশলী বান্ধবী বলল সে আর আমার লেখা পড়ে না। বলল ফেসবুকে আমার লেখার মান দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। নানা রকম জটিল সিরিয়াস লেখার ভেতরে আমি নানা রকম সস্তা হলিউডি সিনেমার গল্প এনে লেখাগুলো হালকা করে ফেলি। সে বলল কি দরকার। সিরিয়াস লেখা সিরিয়াস প্রবন্ধের মত লিখতে, আর সিনেমার গল্প লিখলে সেটা সহজ করে লিখাই ভাল যাতে সেটা পড়তে গিয়ে দর্শন বা মনোবিদ্যা না বুঝতে হয়।
কিন্তু সমাজে মানুষকে বিচ্ছিন্নভাবে এবং শুধুই যুক্তি দিয়ে বা আইন দিয়ে বিচার করা যায় না। মিডিয়া ও খবরের কাগজ মানুষ সম্পর্কে আমাদের লিনিয়ার রিলেশনাল তথ্য হাজির করে। সেটা আমাদের মনে সমাজ সম্পর্কে সার্বিক স্থানিক বা স্পেশিয়াল (spatial) বহুমাত্রিক টপোলজি তৈরী করে না। এর ফলে আমাদের বিচারবোধ তার মাত্রাজ্ঞান হারায়। কোন ত্রুটিটা যে সামান্য আর কোনটা যে সার্বিক ক্ষতিকর, সেই বিচার বোধ আমরা হারিয়ে ফেলি। কারও বাসায় এক বোতল বিদেশী মদ পেলে আমাদের মনে হয় সমাজটা নষ্ট করার জন্য সেই দায়ী। আবার সম্পূর্ণ আইনসিদ্ধ থেকে যিনি সমাজের বা মূল্যবোধের চরম ক্ষতি করে চলেছেন, তাকে আমরা মাথায় তুলি।
সমাজে মানুষকে বুঝতে গেলে বা তার বিচার করতে গেলে বুঝতে হবে তার স্থানিক বা স্পেশিয়াল অবস্থান থেকে। সেই স্থানিক বা স্পেশিয়াল পরিপ্রেক্ষিত তুলে আনে সবসময় সাহিত্য ও সিনেমা। নানা কারণে উপন্যাসটি অথবা ছবিটির সারমর্ম ডাল বা অর্থহীন হতে পারে। কিন্তু কোন এক আশ্চর্য কারণে টুকরো দৃশ্যগুলো অনেক সময়ই সেই প্রেক্ষাপট তুলে আনে যেটা সত্য এবং শিল্পী তথা লেখক পরিচালকদের অবচেতন মন যেটা বলতে চায় সেটা। এই কারণেই কার্ল ইয়ুং এর মত মনোবিশ্লেষকেরা বলে গেছেন, মানুষের চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব সাহিত্যিকেরা যেভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন, মনোবিদ্যা সেভাবে পারে না, তারা রোগ নির্নয় করতে পারে নির্ভুলভাবে, যেটা তাদের প্রকৃত কাজ।
মানব সভ্যতার প্রতিটি যুগে অর্থনীতি যে পথে অগ্রসর হয়েছে, মানুষের মস্তিস্কের কার্য্যপদ্ধতিও তার সাথে তাল মিলিয়ে চলেছে। সেই কারণেই বর্তমানের নিউরোসায়েন্স মনে করে মানুষের মস্তিস্ক একটি আলাদা নিজে নিজে বিবর্তিত হতে থাকা প্রাণি বা ইভলভিং অর্গ্যানিজমের মত, যুগের প্রয়োজনে তাল মিলিয়ে যে নিজেকে গড়ে চলেছে। আমাদের আজকের জীবনযাপনের যে অনুসঙ্গ যন্ত্রপাতি, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, এদের সবার প্রোগ্রাম লেখা হয় লিনিয়ার রিলেশনাল লজিক দিয়ে। প্রসেসরগুলো তথ্য প্রসেস করে একটির পর একটি তথ্য নিয়ে, স্থানিকভাবে বা বহুমাত্রিক ভাবে নয়। আমাদের মস্তিস্কের মগজও তাই ক্রমে হয়ে উঠছে লিনিয়ার রিলেশনাল। অথচ মানুষের দুঃখ, কষ্ট ভোগান্তি, আশা, আনন্দ, স্বপ্ন স্থানিক বহুমাত্রিক।
একমাত্রা - যেমন শুধু টাকাই আমাদের সুখ আনে না। সমাজের গতি প্রকৃতি ও মানুষের জীবনকে বুঝতে হলে তাই মস্তিস্ককে স্থানিক বা স্পেশিয়াল প্রসেসিং করতে শেখাতে হবে। সেটার জন্য বুঝতে হবে পরিস্থিতি, পড়তে হবে সাহিত্য, দেখতে হবে সিনেমা - যেখানে জীবনের টুকরো টুকরো অভিজ্ঞতাকে তুলে আনা হয়ে থাকে। এটাই আমাদের মনকে চিনতে শেখায় জীবনযাপনের বিভিন্ন বহুমাত্রিক প্যাটার্ন। নিজের জীবনে তেমন পরিস্থিতি উপস্থিত হলে প্যাটার্নগুলো চিনে আমরা তখন দিশা পাই কি করতে হবে। সেটা না শিখতে পারলে মুখস্ত পথে আমরা সারা জীবন তরী বেয়ে যাই, অথচ চিনি না ভূ-প্রকৃতির স্থানিক রূপ। জীবনের গোলকধাঁধায় পথ হারিয়ে ভুগি হতাশায় আর বিভ্রান্তিতে।