EN
আরও পড়ুন
রাজনীতি
রাজনীতি
শয়তান পরিচালিত প্যাথোক্র্যাসির সরকার ও
ধর্ম ও দর্শন
ট্রাম্প কেন পোপ হতে চাইছেন
ধর্ম ও দর্শন
ঈসা নবীর মৃত্যু - রিফর্ম থেকে রিলিজিয়ন
ধর্ম ও দর্শন
JadeWits Technologies Limited
গবেষণা

বহুকাল দারিদ্র ও অপুষ্টিতে ভোগা সমাজের হঠাৎ ধনী হয়ে যাওয়া

ভারতে সন্ত্রাসবাদ - শুধুই ইসলাম থেকে নয়

পূর্বাচলের আইসিসিবিতে মেরিনটেক এক্সিবিশন দেখতে যাব সেখানে একটি ভারতীয় কোম্পানীর সাথে কিছু আলাপ আছে। সাথে এক বন্ধু আছে তাই মোটরবাইকে যাব না। ছুটির দিন হলেও রাস্তায় অনেক যান জট থাকে তাই গাড়ি নিয়ে বের হতে ইচ্ছা করল না, উবার নিয়েই গেলাম আমরা। আসার সময় উবার চালকের সাথে গল্প হল - সে কতদিন উবার চালায়, ঢাকায় কতদিন আছে ইত্যাদি। উবার চালক যা বলল সেটা হল তার বাড়ি দক্ষিনবঙ্গে, যশোর-চুয়াডাঙ্গা এলাকায়, ঢাকায় আছে বছর বিশেকের কাছাকাছি। ঢাকায় উবার চালালেও তার পাঁচটা বাড়ি আছে দক্ষিনবঙ্গে। প্রশ্ন করলাম পাঁচটা বাড়ি রেখে সে ঢাকায় ট্যাক্সি চালায় কেন? সে বলল ছেলের জন্য। সে নিজে পড়াশোনায় এগোতে পারেনি। সে চায় তার ছেলেটা পড়াশোনা করুক। কিন্তু তার এলাকার পরিবেশ ভাল না। অপরাধ আর সন্ত্রাসের সাথে গডফাদারদের ক্ষমতার লড়াই, মারামারি খুনোখুনি। সেটাতে তরুণ সমাজের সম্পৃক্তি এবং নেশা ও অপরাধপ্রবণতার যে বিস্তৃতি সেটাতে কোন শিশু সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। তাই সে শিশুপুত্রটিকে নিয়ে ঢাকায় চলে এসেছিল শুধুই তার সুষ্ঠভাবে বেড়ে ওঠা ও পড়াশোনায় মনোযোগের জন্য।    

বাংলাদেশে ২০১৬ সালের হোলি আর্টিজান সন্ত্রাসী হামলার পর বাংলাদেশে ইসলামী সন্ত্রাসবাদ নিয়ে যখন কিছু প্রকল্পে নেতৃত্ব দিয়েছি ও গবেষনামূলক কাজ করেছি তখন খুঁজে পেয়েছি অদ্ভুত সব তথ্য। সেই সময় বাংলাদেশ বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ সূচকে বিশ্বে প্রথম ১৫-২০টি দেশের মধ্যে উঠে এলেও ভারতকে দেখেছি তার আগের বছরগুলোতে তিন থেকে সাতের মধ্যে। তার মানে ভারতে সন্ত্রাসবাদ বাংলাদেশের চেয়ে ছিল ঢের বেশি। অথচ তখনও খুব বেশি ইসলামী সন্ত্রাসবাদের তথ্য পেলাম না। সেই সময় ভারতের সন্ত্রাসবাদের ৯৫ ভাগ ছিল মাওবাদী সহিংস সন্ত্রাসবাদ। ভারতের মানচিত্রে তখন একটি অংশকে বলা হত রেড করিডোর। ভারতের মানচিত্রে লাল চিহ্নিত স্থানগুলোতে একদা ছিল ভয়ানক সশস্ত্র এবং নৃশংস সন্ত্রাসবাদি কর্মকান্ড যেগুলো ছিল মাওবাদি সশস্ত্র সংগঠনের নক্সাল আন্দোলনের এলাকা। আশ্চর্য যে ভারতের অন্য অংশে এই আন্দোলন নেই বললেই চলে। আমাদের সন্ত্রাসী কর্মান্ডগুলো বিচার করলে দেখা যায় স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে পরে যে চীনপন্থি মার্কসবাদী আন্দোলন দানা বেধেছিল, সেটাতে সশস্ত্র এবং নৃশংসভাবে বিস্তৃত ছিল যশোর ঝিনাইদহ থেকে উত্তরবাংলা পর্যন্ত এলাকা যেটি ভারতের রেড করিডোরের সাথে সংযুক্ত। পরবর্তিতে আমাদের দেশে যে ইসলামী সন্ত্রাসবাদের উত্থান সেটিতেও উক্ত এলাকা ছিল সন্ত্রাসবাদে অগ্রণী। 

এই পর্যবেক্ষণ এর সাথে আরো কিছু লক্ষ্যনীয়। যেমন মাওবাদি এবং ইসলামী উভয় সন্ত্রাসবাদেই ক্যাডেট কলেজ এবং স্টেম (বিজ্ঞান- প্রকৌশল-বিজ্ঞান-গণিত) ছাত্রদের সংযুক্তি থেকে আমি এই সিদ্ধান্তে আসি কিছু একটা আছে বেড়ে ওঠা, সংস্কৃতিগত বিষয় এবং মনোজগতে যাতে মানুষ শর্টকার্টে অসম্ভবকে সম্ভব করবে এমন ফ্যান্টাসিতে আবিষ্ট হয়ে যায় এবং দ্রুত মৌলিক মানবিক বিচারবোধ হারিয়ে ফেলে সন্ত্রাসের পথ ধরে। এর সাথে সন্ত্রাসবাদে লাগে রসদ সরবরাহকারী বা প্রমোটার। আমাদের উপমহাদেশে চীন, মার্কিন সিআইএ, পাকিস্তানের আইএসআই সন্ত্রাসবাদে উৎসাহদাতা ও রসদ সরবরাহকারী। সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে আমার এই তত্ত্ব নিয়ে আমাকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। পশ্চিমা বিশেষজ্ঞ, মার্কিন ডিপ স্টেট ডোনার কমিউনিটি যেমন ইউএসএআইডি, ইউএনডিপি এরা অথর্ব এবং মূর্খ লেকেদের বিশেষজ্ঞ বা প্রকল্প নিয়ন্ত্রক হিসাবে নিয়ে আসে যারা তখন সবসময়ই ধর্মকে দোষ দিয়ে ধর্মের অল্টার্নেট ন্যারেটিভ নিয়ে জোর জবরদস্তি করতে থাকে। ইউএনডিপির এমন এক বুটিশ গবেটের মুখের উপর অল্টার্নেট ন্যারেটিভ ছুঁড়ে মেরে প্রক্ল্প থেকে নিজেদের বের করে নিয়ে আসার মত ঘটনাও ঘটেছে।
 
তাহলে সকল পুশ ফ্যাক্টর ও পুল ফ্যাক্টর থাকার কারণেও কিছু এলাকার মানুষ সন্ত্রাসবাদে বেশী জড়ায় এবং কিছু এলাকার কম জড়ায় কেন? এর সাথে জড়িত আছে বহুকাল দারিদ্র ও অপুষ্টিতে ভোগা সমাজের হঠাৎ ধনী হয়ে যাবার বা হঠাৎ তারা খুব মেধাবী বা উচ্চমার্গীয় এই আত্মশ্লাঘা। অতি নিম্ন ও সমাজ রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন কেউ কেউ যখন স্টেম বিষয়ে ভাল ফল করে ফেলে, তখন তারা ভেবে বসে তারা প্রচণ্ড মেধাবী এবং শর্টকাট একটা বিপ্লব করে ফেলেই তারা দুনিয়া বদলে দেবে। খুবই নিরীহ ও সজ্জন এক ক্যাডেট কলেজ বন্ধুকে প্রশ্ন করলাম ক্যাডেট কলেজের বেশিরভাগ মানুষ কঠোর, নি:সঙ্গ, নির্বিকার এবং একজন হত্যাকারী হয় কেন? তিনি বললেন তারা নিজেদের নিয়ে খুব গর্ব ও আত্মশ্লাঘায় ভোগে। গর্ব ও আত্মশ্লাঘার এবং বাকিদের নীচ ভাবার ও ঘৃণা করার শিক্ষা এবং তার সংস্কৃতি ক্যাডেট কলেজগুলোতে বিরাজ করে। আমার মনে হয় ক্যাডেট কলেজগুলো ঘৃণা ও আত্মঘাতের একটা সংস্কৃতি অনুসরণ করে। যেটা সামরিক প্রশিক্ষণের অসংস্কৃতিকরণ বা ডি-সোশালাইজেশনের অগ্রিম প্রয়োগ। এর সাথে রয়েছে স্থানীয় অভিবাসন বা মাইগ্রশনের জন্য অনিরাপত্তা।
     
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রসিদ্ধ ইংরেজ লেখক, কবি, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক ডি এইচ লরেন্স আমেরিকান গণতন্ত্র সম্পর্কে বলেছিলেন "আমেরিকায় গণতন্ত্র কখনই ইওরোপের মুক্তি প্রাপ্তির মত ছিল না। ইওরোপে মুক্তি ছিল একটি দারুন জীবনস্পন্দন। কিন্তু আমেরিকায় গণতন্ত্র সবসময়ই যেন প্রাণবিরোধী। মহানতম গণতন্ত্রিকেরা, যেমন আব্রাহাম লিংকন, যবসময়ই যেন তাঁর বক্তব্যে কোন কিছু ত্যাগ, কোরবানী, অর্থাৎ আত্মঘাতমুলক বৈশিষ্ট্য রেখে গেছেন। আমেরিকান গণতন্ত্র সব সময় আত্মঘাতেরই একটা রুপ। অথবা সেটা অন্য কাউকে হত্যার জন্য... তাদের ভালবাসা, তাদের গণতন্ত্র, তাদের কামলালসায় লুটোপুটি এসবই হচ্ছে এক ধরণের আনুষঙ্গিকতা। মৌলিক আমেরিকান আত্মা হচ্ছে কঠোর, নি:সঙ্গ, নির্বিকার এবং একজন হত্যাকারী।"

JadeWits Technologies Limited
সর্বশেষপঠিতনির্বাচিত

আমরা আমাদের সেবা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করি। আমাদের কুকি নীতির শর্তাবলী জানার জন্য অনুগ্রহ করে এখানে ক্লিক করুন। কুকি ব্যবহারের জন্য আপনি সম্মত হলে, 'সম্মতি দিন' বাটনে ক্লিক করুন।