মাসটা নভেম্বর, সাল ১৯৮৭, স্থান ঢাকার একটি ক্লিনিক। আমার বাবা তখন ক্যান্সারে আক্রান্ত। শরীর শুখিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। রোগ আর কেমোথেরাপি উভয়ের আক্রমনে। প্রচন্ড ব্যাথায় আক্রান্ত দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা। শেষের দিকে স্যালাইন ও অন্যান্য আইভি দেবার জন্য শিরা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কপালের উপর দিয়ে নিয়ে ক্যানুলা আর টিউব লাগানো ছিল বেশ ক’দিন। যেটা উনাকে বেশ বিরক্ত করছিল। মাঝে মাঝে হাত দিয়ে কপালের পাশ থেকে টিউবটা সরিয়ে দিতে চাইতেন। একদিন সেই টিউবটা সরিয়ে দেওয়া হল। কিন্তু দেখা গেল সারা দিনই মাঝে মাঝে উনি টিউবটা সরিয়ে দেবার চেষ্টা করছিলেন যেটা আর ওখানে ছিল না।
সেই সদ্য কিশোর পেরোনো বয়সেই বিষয়টা আমার মনে প্রচন্ড কষ্ট তৈরি করে উনার এই অবস্থা ভেবে, যে মানুষের কি অসহায় একটি অবস্থা। যে জিনিষটা উনাকে উত্যক্ত করছে বলে উনি ভাবছেন, সেই জিনিষটারই অস্তিত্ব নেই। তাহলে আমরা বাইরের মানুষেরা উনাকে সাহায্য করব কিভাবে? সমস্যা থাকলে আমরা সেটা দুর করে দিতে পারি, সমস্যাটাই কল্পিত হলে সেটা আমরা দুর করব কিভাবে? আমার মনে হতে থাকে উনার শরীর ক্রমে মরে যাচ্ছে। হয়ত মস্তিষ্কের স্মৃতিতে অস্বস্তিটা রয়ে গেছে কিন্তু চামড়ার অনুভূতি বা সেন্সরি অংশ অকেজো হয়ে যাচ্ছে। তাই নতুন সেন্সরি তথ্য আর স্মৃতিকে পুনর্লিখন বা রিফ্রেশ করছে না। মানুষের এই অসহায় অবস্থা আমাকে হতভম্ব করে আর চোখের সামনে নিজের বাবার এই পরিণতি আমার চোখে জল এনে দেয়।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড যখন ঘটল, মুজিব রেজিম চেঞ্জের সেই খবরে আমার বাবাকে যেন কিছুটা স্বস্তিই পেতে দেখেছি। যেন একটা চাপ তার বুক থেকে নেমে গেল। আমার বাবা নামাজ রোজা করলেও অতি ধার্মিক বা ধর্ম রাজনীতির পক্ষে ছিলেন না। মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই তিনি আদর্শবাদী সরকারী কর্মকর্তা। আইন ও আদর্শ মেনে চলাই তার জীবনের বৈশিষ্ট ছিল। যুদ্ধের সময় অনেকটা বন্দি থাকতে হয়েছে খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরিবারের সাথে যোগাযোগ ছাড়া। বড় ভাই মুক্তিযুদ্ধে গেছে। বাড়িতে আমরা সব ধরনের স্বাধীনতা পেয়েছি। আমাদের ভাই বোনদের অনেক বিষয়ে তারা অমত করলেও আমাদের কোন কিছুতে বাধ্য করেননি। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর তাঁর স্বস্তি পাবার কারন হল মুজিব আমলের শাসনে নতুন দেশে যে প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা, সেটা আইন ও আদর্শ মেনে চলা মানুষদের ক্রমেই নিরাপত্তাহীন করে ফেলছিল। পরবর্তিতে বাকশাল সৃষ্টি ও সরকারের অধিক নিয়ন্ত্রণ তাদের এই ভয় পায়িয়ে দেয় যে, অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা যেটা চলছে, সেটা এবার সরকারীভবে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং এর বিরুদ্ধে কথা বলার স্বাধীনতাও থাকবে না।
কিন্তু উনার এই ভীতির একটি মনোজাগতিক কারন ছিল। ১৯৪৬ সালের হিন্দু মুসলমান দাঙ্গার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন তিনি। অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে যে মুসলিম হিন্দুকে আর হিন্দু মুসলিমকে রাস্তায়, রেলে, ট্রামে, বাড়িতে হত্যা করা, আগুন দেওয়া, সেটা তাঁদের মত অনেকের মধ্যে ব্যর্থ শাসন ও অরাজকতা সম্পর্কে একটি মানসিক ট্রমা তৈরি করেছিল। ঘর পোড়া গরু যেমন সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়, হিন্দু মুসলমান দাঙ্গার প্রত্যক্ষদর্শীরা তেমনই অরাজকতা দেখলে তাদের মনে অনিরাপত্তাবোধ সবকিছুকে ছাপিয়ে ওঠে। উনারা ভেবেছিলেন যে পাকিস্তান হলে, মুসলিম প্রধান সমাজ হলে, একজন মুসলমান হিসাবে একটি নিরাপদ জীবন ও নৈতিক সমাজ পাবেন তাঁরা। কিন্তু একাত্তরে পাকিস্তানের নৃসংশতা আবার তাদের অনিরাপদ করে তোলে। দেশ স্বাধীন হতে হতেই সামাজিক অনিরাপত্তা আবার তাদের মনের শান্তি নষ্ট করতে থাকে। শেষ সময়ে হাসপাতালের বেডে বাস্তবে না থাকলেও স্মৃতিতে থাকা কপালের উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া ক্যানুলা আর টিউবের মত ১৯৪৬ সালের হিন্দু মুসলমান রায়টের স্মৃতিও তার মনে প্রকটভাবে ছিল যদিও সেটা তেমনভাবে ঠিক আর বাস্তবে ছিল না।
১৪ই জুলাই ১৯৫৮ তে ইরাকের বাগদাদে রাজা দ্বিতীয় ফয়সলের আল-রিহাব প্যালেসে ক্যাপ্টেন আব্দুল সাত্তার আল-আবুসি রাজা দ্বিতীয় ফয়সলের পুরো পরিবারের উপর যে মেশিনগানের ব্রাশফায়ার করতে করতে এগিয়ে যায় চিৎকার করে বলতে বলতে যে "এই লোকেদের আপনাদেরকে প্রতারিত করতে দেবেন না", সেই আল-আবুসিকে পরবর্তিতে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে সেই সময় তিনি কি ভাবছিলেন? আল-আবুসি বলেছিলেন “সেই মুহূর্তে আমার মন ছেয়ে একটি বিষয়ই ছিল, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন”
সেই সেনা বিদ্রোহের মূল পরিকল্পনাকারীরা পরে বলেছিল যে তারা মহানবীর বংশধর তরুণ হাশেমাইট রাজাকে হত্যা করতে চায়নি। তার হত্যার বিরুদ্ধে জনগণের বিদ্রোহের ভয়ে, খুনিরা তার মৃত্যুকে গোপন রাখার চেষ্টা করে। তার দেহ একটি কার্পেটে মুড়ে তার লাশ কবর দেওয়ার জন্য পাচার করে। কিন্তু রাজার চাচা, ক্রাউন প্রিন্স আবদ আল-ইলাহ, যিনি রিজেন্ট হিসাবে আগের ১৪ বছর ধরে দেশ শাসন করেছিলেন, তার ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন ছিল। হত্যাকারীরা তার দেহটি বিক্ষুব্ধ জনগণের হাত দিয়ে দেয়। সামরিক ক্যু এর মাধ্যমে রাজ পরিবারকে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার বিক্ষুুব্ধ জনতা, যাদের বেশিরভাগ তরুণ, তারা প্রতিশোধ নিতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে।
আবদ আল-ইলাহ এর মরদেহটি নির্মম অসম্মানের শিকার হয়েছিল। একটি গাড়ির সাথে বেঁধে তার মৃতদেহ বাগদাদের রাস্তায় টেনে নিয়ে বেড়ানো হয়েছিল। চারিদিকের জনতা এটিকে পাথর ছুঁড়ে মারছিল। একইভাবে, ইরাকের দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-সাইদ পাশা এক ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হয়েছেন। আল-রশিদ স্ট্রিটে তার দেহ বিচ্ছিন্ন, টুকরো টুকরো করে ধড়টা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যেখানে জনতা তার উপর পাথর ছুঁড়েছিল এবং ঠাট্টা বিদ্রুপ করেছিল। ভয়ঙ্কর বিভৎসতায় তার একটি কাটা আঙ্গুল অ্যালকোহলে সংরক্ষিত করে মিশরের কায়রোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মিশরের সামরিক রাষ্ট্রপ্রধান গামাল আবদেল নাসেরবে "উপহার" দেবার জন্য।
আমি শতভাগ নিশ্চিত, এই মাসের ৫ই অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি শেষ পর্যন্ত তার ছেলে এবং বোনের কথায় রাজি না হয়ে দেশত্যাগ না করে বঙ্গভবনে থেকে যেতেন, তাহলে আমাদের নতুন স্বাধীনতা আনা ছাত্র-জনতা তাকে হত্য করে তার আঙ্গুল কেটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে পাঠাত।
কেন একজন মুসলমান সামরিক সদস্য একটি ক্যু এর আদর্শের অংশীদারী না হয়েও “ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন” বলে চিৎকার করে নবীর বংশধর তরুণ জনপ্রিয় রাজাকে হত্যা করে? কেন দেশের নেতাকে হত্যা করে তার আঙ্গুল কেটে বিদেশের প্রেসিডেন্টকে পাঠানো হয়? এগুলো বুঝতে হলে ঐ যে আমার পিতার মৃত্যুসয্যায় থাকাকালীন ট্রমা অবস্থাকে বুঝতে হবে। বুঝতে হবে মাইগ্রেশন এবং স্থানীয় মাইগ্রেশনের সাথে ট্রমার সম্পর্ক। সব প্রবাসী বা মাইগ্র্যান্টরা কম বেশি ট্রমাটাইজড। এই ট্রমার জন্য উৎপন্ন অনিরাপত্তাবোধ ও ভীতি এবং প্রতিশোধকে তারা দুরের কোন কিছুর সাথে সংযুক্ত করে। বাংলাদেশের সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনায় ব্যপক ইন্ধন যুগিয়েছে বিদেশে বাস করা বাংলাদেশী মাইগ্র্যান্টরা। গত ১৫ বছরে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য শহরগুলোতে ব্যপকভাবে বেড়েছে লোকাল মাইগ্রশন। সামরিক ব্যারাকগুলোও এক অর্থে লোকাল মাইগ্র্যান্টদের শিবির।
১৯৫৮ সালের ইরাক, হাশেমাইট রাজাদের আমলে তার আগের কয়েক দশকের শাসনে ব্যপক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফল। এর জন্য শহরগুলোতে বেড়েছিল লোকাল মাইগ্রেশন। বেড়েছিল সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা। বেড়েছিল ক্রমেই আর্থিক উন্নতি করা উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী। এরাই জন্ম দিয়েছিল এলকাইন্ডের বয়ঃসন্ধিকালের ছয়টি অপরিণত চিন্তার এক জেনারেশনকে (আমার আগের লেখা দেখুন)।
ঐ সময় মধ্যপ্রাচ্যে চলছিল আমাদের উপমহাদেশের ভারত-পাকিস্তানের দেশ ভাগের মতই ইসরাইল-প্যালেস্টাইন বিভেদ ও এটা নিয়ে আঞ্চলিক রাজনীতি। আরব-জাতীয়তাবাদ হয়ে ওঠে পুরো মাইগ্র্যান্ট ট্রমার কল্পিত প্রতিক্রিয়া বা প্রজেক্টেড রেসপন্স। বিগ্রডিয়ার কাশেম ছোট উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু করলেও নিজ মদকাদের লোকজন বসাতে গিয়ে ইরাকের জাতীয় ইন্টিগ্রিটি ও প্রশাসনের অবকাঠামো ভেঙ্গে ফেলেন। এরপর শুরু হয় পতনের ডোমিনো ইফেক্ট। ক্যু ও পাল্টা ক্যু।
আর ঐ যে বাগদাদের আল-রিহাব প্যালেসে মাথায় “প্যালেস্টাইন” নিয়ে ব্রাশ ফায়ার করা ক্যাপ্টেন আব্দুল সাত্তার আল-আবুসি? তার কি হল? সে এর পর প্রায়ই স্বপ্ন দেখতে থাকে সাদা কাপড়ে রাজা এসে প্রশ্ন করছেন আমার কি দোষ ছিল? এর পর একে একে মৃতরা সবাই আসতে থাকে। অভ্যুত্থানের জন্য আল-আবুসির কোন বিচার বা শাস্তি হয় না। বরং তাকে পদোন্নতি এবং বিদেশী মিশনে চাকুরী দিয়ে পুরষ্কৃত করা হয়। কিন্তু মানুষ খুনের জন্য দায়ীদের শাস্তি মানুষ না দিলেও এটা প্রতিটি মানুষের মস্তিষ্কে ডিফল্ট বা বিল্ট ইন থাকে।
আল-আবুসির ঘনিষ্ঠ বন্ধু, প্যারাট্রুপার কর্নেল আদনান মুহাম্মদ নুরির কথার মাধ্যমে আল-আবুসির যন্ত্রণাদায়ক মনের সন্ধান করা যাক:
“আমি প্রায়শই আল-আবুসিকে গভীর উদ্বেগ ও চিন্তাভাবনারত অবস্থায় দেখেছি। যখন আমি একবার তার মনের কষ্টের কথা জিজ্ঞেস করলাম, তখন সে আমার দিকে বিষণ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে স্বীকার করল, 'তুমি কি জানো আদনান, আমি রাজাকে মেরে ফেলার পর থেকে আমার ঘুম চলে গেছে। রাজা আমার স্বপ্নে আমাকে দেখতে আসে, সাদা পোশাকে, প্রশ্ন করে, 'তুমি আমাকে কেন মেরেছ? আমি কি তোমার সাথে কোন অন্যায় করেছি? কেন তুমি আমার জীবন যৌবনের আনন্দ কেড়ে নিলে?' এই দুঃস্বপ্ন প্রতি রাতে আমাকে তাড়া করে। এই যন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য আমি মৃত্যু কামনা করি।'
দুই বছর পরে, তাদের আবার দেখা হয়। ততক্ষণে আল-আবুসি মিলিটারি কলেজের লেকচারার হয়ে গেছেন। যখন কর্নেল আদনান তার সুস্থতা এবং দুঃস্বপ্নের বিষয়ে আবার জিজ্ঞাসা করলেন, আল-আবুসি বললেন যে যন্ত্রণাগুলো তীব্রতর হয়েছে। “এখন, রিজেন্ট আবদ আল-ইলাহও আমার স্বপ্নে দেখা দেয়। কখনও কখনও, অচেনা মহিলারা আমাকে অভিযুক্ত করে বলে, 'আপনি যতদিন বেঁচে আছেন আমাদের আত্মারা আপনাকে অনুসরণ করে যতক্ষণ না আমাদের আবার দেখা হয়।' আমি প্রায়ই ভাবি কখন আমি তাদের মুখোমুখি হব... আদনান, আপনি কি বিশ্বাস করেন যে এখন আমি আসলে পরবর্তী জীবনে তাদের সাথে দেখা করার অপেক্ষায় আছি?"
এটা গুজব যে আল-আবুসি রাশিয়ায় সামরিক অ্যাটাশে থাকাকালীন মানসিক চিকিৎসা করিয়েছিলেন। তবে এটা সত্য যে অনেক ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা এবং বিভিন্ন ওষুধের মাধ্যমে চেষ্টা করা সত্ত্বেও, তার যন্ত্রণা অব্যাহত ছিল। তার সমস্যাটা আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছিল নিরাময়যোগ্য কিন্তু নিরাময় হচ্ছিল না। তার কষ্ট এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া দেখে তিনি মৃত ব্যক্তিকে হিংসা করতেন, বিড়বিড় করতেন, "তাকে অভিনন্দন... সে এই জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছে।"
১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারির এক শীতল সকালে, কর্নেল আল-আবুসির যন্ত্রণাদায়ক জীবন শেষ হয়। তিনি তার স্ত্রীর কাছ থেকে এক কাপ চা চেয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী যখন সেই চা তৈরি করছিলেন, তখন তিনি খুব কাছে একটি গুলির শব্দ শুনতে পান। পাশের ঘরে গিয়ে তিনি তখন একটি বিভীষিকাময় দৃশ্যের সম্মুখীন হন। তার স্বামী তার নিজের রক্তের তৈরি পুকুরে পড়ে আছে, তার নিজেরই একটি বুলেট তাকে ঐ রাজ পরিবারের কাছে নিয়ে গেছে।
আল-আবুসির মৃত্যুর সাথে সাথে বাগদাদের আল-রিহাব প্যালেসের একটি অধ্যায় শেষ হয়ে যায়। তবুও বাগদাদের মানুষের মনে এই প্রশ্নগুলি বহুদিন ধরে ছিল। রাজা ফয়সালের ভূত কি সত্যিই তার হত্যাকারীর প্রতিশোধ নিতে ফিরে এসেছিল? এটা কি ঐশ্বরিক প্রতিশোধ ছিল? নাকি দোষী বিবেকের ভার, যা আল-আবুসিকে দুঃস্বপ্ন ও হতাশার নিম্নগামী সর্পিলতায় নিমজ্জিত করেছিল, যার পরিণতি আত্মহত্যায় পরিণত হয়েছিল? উত্তরগুলো অজানাই থেকে যায়।