EN
আরও পড়ুন
রাজনীতি
পলিটিক্যাল সিস্টেমস থিংকিং এর শিক্ষা
রাজনীতি
JadeWits Technologies Limited
রাজনীতি

পরিবর্তিত আমেরিকার চাপে

গাজওয়াতুল হিন্দ এখন গাজওয়াতুল বরবাদ

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমন্ত্রিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায় সরব ছিল মাদ্রাসার নামে কিশোর তরুণদের মধ্যে অহিংস চরমপন্থার (ননভায়েলেন্ট এক্সট্রিমিজমের) বীজ বপনকারী সংগঠন হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ। অহিংস চরমপন্থা হচ্ছে সহিংস চরমপন্থা (ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম) যে পরিবেশ পরিস্থিতিতে চর্চা অসম্ভব, পুলিশি তৎপরতা অথবা অন্য কেন প্রতিরোধের কারণে, সেখানে আইনের ভেতর থেকেই কোন দেশ, জাতী, সংস্কৃতি বা ধর্মের বিরুদ্ধে ক্রমান্বয়ে ঘৃণা, বিরোধীতা ও উন্মাদনা তৈরী করা যাতে যে কোন উপলক্ষ্যে সেই উন্মাদনাকে মূহুর্তেই রাজনৈতিক শক্তিতে রূপদান করে অরাজকতা তৈরী করা যায় ও রাজনৈতিক পট পরিবর্তন করে ফেলা যায়। 

“২০১০ এর ১৯ জানুয়ারিতে, এই সংগঠনটি চট্টগ্রামের প্রায় একশোটি কওমি মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত হয়। ২০০৯ তে আওযামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই ২০১০ সালে এটি বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষানীতির বিরোধিতার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। ২০১১ সালে তারা বাংলাদেশ নারী উন্নয়ন নীতি (২০০৯) এর কয়েকটি ধারাকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক দাবি করে এর তীব্র বিরোধিতা করে” [উইকিপিডিয়া]।  

মোদির সফরের বিরুদ্ধে তাদের বক্তব্য ছিল, “স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উদযাপনে এমন কাউকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা উচিত হবে না, যাকে এদেশের মানুষ চায় না বা যার আগমন এদেশের মানুষকে আহত করবে। কারণ নরেন্দ্র মোদী একজন মুসলিম বিদ্বেষী হিসাবে সারা বিশ্বে পরিচিত।”

মোদির সফরের দিনে বেলা সোয়া ২টার দিকে হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা থেকে কয়েক হাজার হেফাজতকর্মী মিছিল নিয়ে বের হয়। লাঠিসোঁটা নিয়ে তারা হাটহাজারী থানা, ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও ডাক বাংলোতে হামলা চালায়। ঢাকায় বায়তুল মোকাররম মসজিদেও ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়। 

হাটহাজারীতে উপোরোক্ত সংঘর্ষের ফলস্রুতিতে কয়েকজন মাদ্রাসা ছাত্র নিহত হয় এবং পরবর্তী দু তিন দিনের সহিংস বিক্ষোভে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ জন এবং হাটহাজারীতে ৪ জন মারা গেছে। 

কওমি মাদ্রাসার শিক্ষকদের ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয় নিয়ে প্রতিবাদী হওয়া যুক্তি সঙ্গত এবং এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। যে কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমন যেটা স্বাধীনতার যে সুবর্ণ জয়ন্তী সেই স্বাধীনতার যুদ্ধে পাকিস্তানিরা হত্যা করেছে ২০ থেকে ২৫ লাখ বাঙালী মুসলিম। ভারত সহায়তা করেছে এই মুসলিম নিধনকারীদের বিরুদ্ধে বিজয়ে যারা নিজেদের উচ্চতর মুসলিম মনে করত এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে তারা মনে করত এটা তাদের জন্য ইসলাম রক্ষার জন্য ধর্মযুদ্ধ। রঙে 'কালো ও আকৃতিতে ছোট' বাঙালীদের তারা মনে করত নিম্ন স্তরের মুসলমান।

এই ঘটনার ত্রিশ বছর পর থেকে যদি মুসলিমদের কেউ শত্রু হয়ে থাকে তাহলে সেটা জর্জ সোরোস প্রভাবিত আমেরিকার ডিপ স্টেট। পিতা বুশ, পুত্র বুশ ও ওবামা এরা হত্য করেছে আরও অন্তত ২৫ লাখ এশিয় মুসলমান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে। ধ্বংস করেছে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, চীরতরে নষ্ট করেছে এইসব প্রাচীন ইসলামী সভ্যতার জনপদ ও সংস্কৃতি।

শুধু এটুকুতেই থেমে নেই, সন্ত্রাসবিরোধীতার নামে ইসলামোফোবিয়ার বীজ তারা বপন করে চলেছে সারা দুনিয়ায় গত বিশ বছর ব্যাপী। এই কাজে পাকিস্তান তাদের দোসর। সেই ১৯৮০ সাল থেকে প্রতি বছর তারা পেয়ে আসছে দুই থেকে চার বিলিয়ন ডলারের অর্থ ও সামরিক সাহায্য। যার একটা বড় অংশ ব্যয় হয় আফগানিস্তানে নিরস্ত্র নিরপরাধী  মুসলিম নিধনে।

গত পঞ্চাশ বছরে সত্যিকারে যারা মুসলিম নিধনে রত তারা হল আমেরিকার ডিপ স্টেট ও তাদের সহযোগী পাকিস্তানের মত মির্জাফর রাষ্ট্রগুলো যারা মুসলিম নিধনে সহযোগীতা করে অর্থ ও সমরাস্ত্র আয় করে। এর পেছনের শক্তি হল পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যারা এই আমেরিকান টাকার আইনি বেআইিনি সর্বোচ্চো ভাগীদার। আমেরিকায় প্রথম টার্মে ট্রাম্প সরকারে আসার পর এই অর্থ সহযোগীতা বন্ধের আদেশ দিলে অর্থ সঙ্কটে পড়ে পাকিস্তান এবং সৌদি আরব এগিয়ে আসে তাদের লালবাতি জ্বলা থেকে বাঁচাতে।

ইসলামের বিরুদ্ধে নিজেদের এই মির্জাফরি ও হঠকারিতা থেকে রেহাই পেতে পাকিস্তানীরা কল্পনার শত্রু তৈরি করে সেই ডিপ স্টেট আমেরিকানদের মতই। আমেরিকানদের যেমন একসময় কম্যুনিস্টরা ছিল কল্পনার শত্রু, এর পর হয়েছে মুসলমানেরা। পাকিস্তানের তেমনই কল্পনার শত্রু হচ্ছে ভারত এবং হিন্দুরা। এবং এই শত্রু তৈরী করতে তারা কোরআনের ভ্রান্ত অনুবাদ সহ নানা রকম ভুয়া হাদিসের নসিহত নিজেদের মত ব্যাখ্যা করে ভারত ও হিন্দুদের কল্পনার শত্রু বানায় যাতে প্রকৃত শত্রুরা তরুণ সমাজের নজরের বাইরে থাকে ও তারা মির্জাফরি চালিয়ে যেতে পারে। ভারতের অনেক মৌলবাদী মাওলানারাও এতে যোগ দেয় এই খোয়াবে যে একদিন পুরো ভারত আবার ইসলাম শাসিত হবে। 

বছর কয়েক আগে এক ডিসেম্বরে, বড়দিনে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পাকিস্তানের সামা টিভিতে এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের বিশ্বসেরা ক্রিকেটার শোয়েব আখতার বলছেন, “আমাদের ধর্মগ্রন্থে লেখা রয়েছে গাজা-এ-হিন্দ (গাজওয়াতুল হিন্দ) ঘটবে। এবং অ্যাটকে নদীর (সিন্ধু নদী) জল দুবার রক্তে লাল হয়ে যাবে। তারপর একাধিক শক্তির আবির্ভাব ঘটবে- শামাল মাসরিক, আফগানিস্তান থেকে সৈনিকরা অ্যাটকে পৌঁছবে। উজবেকিস্তান ও আরব থেকেও সেনারা আসবে। মুসলিমরা কাশ্মীর দখল করবে আগে। তারপর আক্রমণ করবে ভারতে।”

পাকিস্তানে এবং ভারতেও মৌলবাদী ধর্মগুরুরা দীর্ঘদিন ধরে এই গাজওয়াতুল হিন্দ এর তত্ত্ব আউড়ে সন্ত্রাসী এবং বিদ্বেষী বীজ রোপন করে থাকেন। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, মুসলিম এবং হিন্দুদের মধ্যে এক মারাত্মক সংঘর্ষ হবে। যেখানে মুসলিমরা বিজয়ী হবে। জয়েশ এ মহম্মদ এবং আরও অনেক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এই গাজওয়াতুল হিন্দ প্রচার করেই সংগঠনে কিশোর তরুনদের দলভুক্ত করে থাকে। বলা হয়ে থাকে এই ধর্মযুদ্ধে যাঁরা অংশ নেবেন তাঁরা যত পাপই করুক বেহেশতে যাবে। এই গাজওয়াতুল হিন্দ অনুযায়ী, সিরিয়া থেকে এই যুদ্ধ শুরু হয়ে ভারতে এসে পৌঁছাবে। তারপর ভারত দখল করে ভারতবর্ষে ইসলামী শাসন কায়েম করবে ধর্মযুদ্ধের সৈনিকরা।

বাংলাদেশের মাদ্রাসাগুলোতে কিশোর তরুণদের মধ্যে, যারা এর মধ্যেই নিজেদের মূল ধারা জনগোষ্ঠি থেকে নিজেদের বিপন্ন ভাবে এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর ভাবে বিচ্ছিন্ন ভাবে, তাদের মধ্যে এইরূপ যুদ্ধের আমন্ত্রণ ও বিজয়ের বার্তা, বেহেশতের হাতছানি যেখানে তারা নিজেদের ইসলামের ঝান্ডাধারী মনে করে. তাদের মনে বিশাল উদ্দীপনার সৃষ্টি করতে বাধ্য। হুজুরদের বক্তৃতা, বাংলায় বিভিন্ন পুস্তিকা, কমিক স্ট্রিপ, ভিডিও নানা রকম কন্টেন্টে গাজওয়াতুল হিন্দ এর দর্শন ও আমন্ত্রণে পরিপূর্ণ প্রকাশনা ও নেট জগত।

অনলাইনে যে সব প্ররোচনা রয়েছে সেগুলো ভুয়া হাদিসের নানা রকম ব্যাখ্যা উল্লেখ করে আইসিস ও সিরিয়ায় যুদ্ধের সাথে মিলিয়ে এমনভাবে পরিবেশন করা যে যে কোন সরল মন এতে প্রলুব্ধ হয়ে নিজের জীবন উৎসর্গের ফ্যান্টাসিতে পুলিশের গুলির সামনে ঝাঁপিয়ে পড়তে দ্বিধা করবে না। এর পর যে সব জিহাদি ভাই গুলিতে নিহত হবে তাদের লাশ আর রক্ত হাজার গুনে বাড়িয়ে তুলবে এই উন্মাদনা। এটা প্রকৃতিরই নিয়ম।

অনলাইনে যে সব প্ররোচনা রয়েছে সেগুলো সেগুলো এরকম: 

“ইসলামের সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাঃ এর একটি ভবিষ্যদ্বাণী হচ্ছে গাজওয়াতুল হিন্দ। এই ভবিষ্যদ্বাণীতে বলা হয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম এবং অমুসলিমদের মধ্যে একটি যুদ্ধ হবে এবং এই যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় ঘটবে।” 

“হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, “অবশ্যই আমাদের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন, আর তারা রাজাদের শিকল/বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে । এবং আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন (এই বরকতময় যুদ্ধের দরুন)। এবং যে মুসলিমেরা ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম আঃ কে সিরিয়ায় (শাম) পাবে।”

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বলেন, “ আমি যদি সেই গাযওয়া পেতাম, তাহলে আমার সকল পুরাতন ও নতুন সামগ্রী বিক্রি করে দিতাম এবং এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতাম । যখন আল্লাহ্ আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরে আসতাম, তখন আমি হতাম একজন মুক্ত আবু হুরায়রা; যে কিনা ফিরত সিরিয়াতে হযরত ঈসা আঃ কে পাবার গর্ব নিয়ে। ও মুহাম্মাদ সাঃ! এটা আমার গভীর ইচ্ছা যে আমি ঈসা আঃ এর এত নিকটবর্তী হতে পারতাম যেন আমি তাকে বলতে পারি যে আমি মুহাম্মাদের সাঃ একজন সাহাবী। বর্ণনাকারী বলেন এ সময় মুহাম্মাদ (সঃ) মুচকি হেসে বললেনঃ ‘ খুব কঠিন, খুব কঠিন ’ (মুসনাদে আহমাদ, শাইখ)”

“হাদীসে আরও উল্লেখ পাওয়া যায়, নবীজী সাঃ বলেছেনঃ "আমার উম্মতের দুটি দল কে আল্লাহ্ তা‘আলা জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ দান করবেন। এদের একদল যারা হিন্দুস্থানের জিহাদে অংশগ্রহণ করবে, আর একদল যারা ঈসা ইবন মারিয়াম আঃ -এর সঙ্গে থাকবে।"

“হযরত কা’ব রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, "বায়তুল মোকাদ্দাসের (জেরুজালেমের) একজন শাসক হিন্দুস্তানের দিকে সৈন্য প্রেরণ করবেন এবং সেখানের যাবতীয় সম্পদ ছিনিয়ে নিবেন। ঐ সময় হিন্দুস্তান বায়তুল মোকাদ্দাসের (জেরুজালেমের) একটি অংশ হয়ে যাবে। তার সামনে হিন্দুস্তানের সেনা বাহিনী বন্দী অবস্থায় পেশ করা হবে। প্রায় গোটা পৃথিবী থাকবে তার শাসনের অধীনে। দাজ্জালের আবির্ভাব হওয়া পর্যন্ত ভারতে তাদের অবস্থান থাকবে"। 

তারা যেভাবে মিথ কল্পনা ও বাস্তবতা মিশিয়ে পরিবেশনা করে, যে কোন কৈশোর মন আত্মপরিচয়ের জন্য যেন সেটাই খুঁজতে থাকে। কিশোর মন মানেই অসুখী। দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে জালিমদের দ্বারা তাই সে মনে করে সে অসুখী। একটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে সে দুনিয়াকে রক্ষা করতে চায় এবং সেটাতে জিতে সে তার আইডল, পরম নেতৃত্বের সাথে মিলিত হতে চায়। ঠিক এভাবেই সাজানো হয়েছে এই নতুন আদর্শ যুদ্ধের দর্শন এবং এখানে হিন্দু ভারত সেই কল্পিত শত্রুর বাস্তব প্রতিরূপ। অনলাইনে তাদের ন্যারেটিভটি সংক্ষেপে এরকম: 

১. আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ইমাম মাহদীর আগমন ঘটতে পারে।
২. তিনি জেরুজালেম (সিরিয়া) দখল করবেন (আইসিস?)।
৩. জেরুজালেমের একজন শাসক হিন্দুস্তানে সৈন্য পাঠাবেন এবং তারা বিজয়ী হবে। এই যুদ্ধই গাজওয়াতুল হিন্দ। সেই শাসক পৃথিবীর অধিকাংশ স্থান দখল করবেন।
৪. দাজ্জালের আবির্ভাব পর্যন্ত তার সৈন্যরা ভারতে অবস্থান করবে।
৫. দাজ্জালের আবির্ভাব হওয়ার পর আসবেন হযরত ঈসা আঃ।
৬. যুদ্ধ ফেরত সৈন্যরা ঈসা আঃ এর সাথে মিলতে সিরিয়া যাবে।

সেই ৫২ থেকে ৭১, পাকিস্তানি শাসক ও নীতিনির্ধারকেরা সবসময় ভেবেছে আওয়ামী লীগ ভারতের স্বার্থে ও প্ররোচনায় অরাজগতা, ‘গন্ডগোল’ তৈরি করছে। তারা কখনই ভাবতে চায়নি আওয়ামী লীগের ভেতরের শক্তিটা কি। সেটা যে ছিল বাংলাদেশের মানুষের আবেগ ও আত্মপ্রতিষ্ঠার দর্শন – সেটার ডিনায়ালে ছিল তারা। তারা বাঙালীদের স্বপ্নকে বুঝতে না চেয়ে সিমপ্যাথেটিক যারা তাদের শত্রু মনে করেছে। ভারতকে মনে করেছে আসল সমস্যা। পুলিশি ও সামরিক শক্তি দিয়ে আদর্শের শক্তিকে হত্যা করতে চেয়েছে, ফল হয়েছে বিভাজন। বর্তমানের বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সরকার হেফাজতকে ঠিক সেভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে যেভাবে পাকিস্তান আওয়ামী লীগকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে। অপর দিকে দেশের কোটি কোটি তরুণ তরুণী এখন বিশ্বাস করে গাজওয়াতুল হিন্দে- যারা ভাবে ভারতই ইসলামের শত্রু তাই বাংলাদেশের শত্রু। গুলি যত হবে, লাশ যত পড়বে সেই বিশ্বাস ও আবেগ কিন্তু আরও দৃঢ় হবে। 

এই গাজওয়াতুল হিন্দ এর স্বপ্নে বিভোর তরুণ তরূণীরাই ২৪ এর মার্কিন ডিপ স্টেট ও জর্জ সোরসের রঙিন বিপ্লবের সৈনিক। দেশের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী নানা স্টেট নন স্টেট অ্যক্টরের সাথে জোট বেধে জুলাই সন্ত্রাস করে একটি নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে তারা ক্ষমতা দখল করেছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডিপ স্টেট বিরোধী ট্রাম্প সরকার আবার সরকার আসার পর এখন তারা বিপাকে। পরিবর্তিত আমেরিকার চাপে গাজওয়াতুল হিন্দ এখন গাজওয়াতুল বরবাদ। এখন তাই বিবাদ নিজেদের সহযোগীদের সাথেই।   

JadeWits Technologies Limited
সর্বশেষপঠিতনির্বাচিত

আমরা আমাদের সেবা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করি। আমাদের কুকি নীতির শর্তাবলী জানার জন্য অনুগ্রহ করে এখানে ক্লিক করুন। কুকি ব্যবহারের জন্য আপনি সম্মত হলে, 'সম্মতি দিন' বাটনে ক্লিক করুন।