আমরা যারা সামাজিক বিষয় বা মনোবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করি তারা উপাত্ত বা ডেটা, তথ্য বা ইনফরমেশন, জ্ঞান বা নলেজ ও বোধ বা উইসডমের ধাপগুলো আলাদা করে দেখতে পারি। অনেক মানুষ সেটা পারে না। তারা উপাত্ত থেকে সরাসরি বোধে পৌছে গেছে বলে মনে করে। অথচ উপাত্ত থেকে ডেটা, সেটা থেকে জ্ঞান ও শেষে বোধে পৌছাতে গেলে আরো দুটো মাত্রা যুক্ত হতে হয়। সেগুলো হচ্ছে পরিস্থিতজ্ঞান বা কনটেক্সট ও বোঝা বা আন্ডারন্ট্যান্ডিং। এই দুটোর জন্য দরকার মডেলিং। শিশুরা মনের মধ্যে ডেটা থেকে কনটেক্সট ও আন্ডারন্ট্যান্ডিং এর মাধ্যমে সেই মডেলিং তৈরি করতে পারে না বলে তারা উপাত্ত থেকে সরাসরি বোধে পৌছে যায়।
যেমন উদহরণ হিসাবে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হবার আগে আগেই চীন সফরে গিয়েছিলেন। চীন থেকে তিনি বড় ধরনের ঋণ চুক্তি করে আসতে পারবেন বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু তিনি মোটামুটি খালি হাতে ফেরেন। এর পর পরই ক্ষমতা হারানোর ফলে অনেকে উপাত্ত থেকে সরাসরি বোধে পৌছে গিয়ে মনে করতে থাকেন যে চীন তার বিরুদ্ধে কাজ করেছে। আসলে হয়ত চীন বুঝেছিল যে তিনি ক্ষমতা হারানোর দ্বার প্রান্তে এবং বাংলাদেশ একটি আর্থিকভাবে ঝুকিপূর্ণ দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। তাই তারা হয়ত নতুন ঋণ দিতে রাজি হয়নি।
উপাত্ত থেকে সরাসরি বোধে পৌছে যাওয়া শিশু মস্তুিষ্কের জন্য স্বাভাবিক। কিন্তু পরিণত মানুষের চিন্তায় যদি এমন ত্রুটি থাকে তাহলে সেটা চিন্তাগত সীমাবদ্ধতা বা কগনিটিভ লিমিটেশন। অপরিণত মানসিকতা, নানা ধরণের মেন্টাল ডিসঅর্ডার ও একঘেয়ে কাজ করে মস্তিষ্কের চিন্তাশীল অংশ দীর্ঘদিন অলস রাখার ফলে প্রুনিং হয়ে পরিণত মানুষের এই রকম মানসিক সীমাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে। ফেসবুকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্যস্যা নিয়ে আলোচনায় এই ধরণের মানসিক সীমাবদ্ধতা যাদের আছে তাদের সহজেই চেনা যায়। এদের চেনার আর একটি পথ হচ্ছে এরা সহজেই আবেগপ্রবণ হয়ে যায় এবং আক্রমনাত্মক বা নোংরা ভাষা ব্যবহার করে থাকে।