মদের কর ৬৩৩% করে সম্ভবতঃ ভাগ বাটোয়ারাতে বনিবনা না হওয়াতে সেই সব চালান ধরে সরকারী কর্মকর্তাদের কি উল্লাস। তখনই বলেছিলাম ফল ভোগ করতে হবে। এই উল্লাস মানুষের বা দেশের কল্যান থেকে উৎসারীত নয়, এই উল্লাস প্রতিশোধের উল্লাস। প্রতিশোধের উল্লাসে অভিশাপ লাগে, এখন হজম করত হবে মার্কিন "প্রতিশোধমূলক" বা "পারস্পরিক" শুল্ক। এর মধ্যেই রুগ্ন পোশাক শিল্প কিন্তু এই ধাক্কায় শেষ। ১৫.৭% কর এখন ৩৭% যা কার্যকর হবে ৯ এপ্রিল থেকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি "প্রতিশোধমূলক শুল্ক" (Reciprocal Tariffs) নামে একটি নতুন শুল্ক নীতি ঘোষণা করেছে, যা ২ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত হয়েছে। এই নীতির মূল লক্ষ্য হলো বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা (Trade Imbalance) কমানো এবং মার্কিন পণ্যের উপর অন্যান্য দেশের শুল্ক বা বাণিজ্য বাধার প্রতিক্রিয়া হিসেবে সমান বা আনুপাতিক শুল্ক আরোপ করা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই নীতিকে "লিবারেশন ডে" হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের বাণিজ্যিক ক্ষতি পূরণ করবে। এই শুল্কের আওতায় সব দেশের জন্য একটি সাধারণ ১০% শুল্ক ৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে, এবং নির্দিষ্ট দেশগুলোর জন্য অতিরিক্ত "প্রতিশোধমূলক শুল্ক" ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।
২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ২.২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যেখানে বাংলাদেশ থেকে ৮.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬.২ বিলিয়ন ডলার। এই ঘাটতির অনুপাত গণনা করলে দেখা যায়:
আমদানি (৮.৪ বিলিয়ন) / রপ্তানি (২.২ বিলিয়ন) = ৩.৮১
ঘাটতির শতকরা হার = [(৮.৪ - ২.২) / ৮.৪] × ১০০ = ৭৩.৮১% ≈ ৭৪%
অর্থাৎ, ৭৪% হলো বাণিজ্য ঘাটতির অনুপাত, যা মার্কিন আমদানির তুলনায় ঘাটতির পরিমাণকে প্রকাশ করে। বাংলাদেশের গড় শুল্ক হার (Effectively Applied Tariff Weighted Average) ১১.৮২%, এবং মোস্ট ফেভারড নেশন (MFN) শুল্ক হার ১২.৩২%, যা মার্কিন পণ্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
মার্কিন প্রশাসনের নতুন নীতি অনুযায়ী, তারা বাণিজ্য ঘাটতির অনুপাতের অর্ধেক হারে শুল্ক আরোপ করছে। সুতরাং, ৭৪% ঘাটতি অনুপাতের অর্ধেক হিসেবে ৩৭% শুল্ক বাংলাদেশের রপ্তানির উপর আরোপিত হয়েছে। এটি শুল্ক হারের প্রতিক্রিয়া নয়, বরং বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার প্রতিফলন।
যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে মার্কিন সরকার এই "প্রতিশোধমূলক শুল্ক" আরোপ করেছে সেটি থেকে আমরা কিভাবে বের হব বলা কঠিন। বের না হতে পারলে এর মধ্যেই নাজুক পোশাক শিল্পের জন্য এটি হবে চরম আঘাত।
এদেশের সশস্ত্র নিরস্ত্র সরকারী কর্মকর্তারা যা খুশি তাই করেছে দেশের আইন কানুন নিয়ে। যার প্রতিফলন হচ্ছে বিদেশী বিনিয়োগ না আসা এবং বানিজ্য ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত না হওয়া। এর পর তারা নিজেদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করে বেতন বাড়িয়ে ঘুষ খেয়ে এতই অমানুষ হয়ে গেছে যে জাতীর পিতার ভাস্কর্যের মাথায় উঠে প্রস্রাব করার ব্যবস্থা তারাই করে দিয়েছে। এই অভিশাপ লাগবে না? ৩২ নং ভেঙ্গে ফেলার অভিশাপ লাগবে না? সামরিক বাহিনী এক দলের প্রতি বন্দুকের নল ধরে অন্য দলকে দিয়ে ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মাকে যেভাবে অপমানিত করেছে, তার অভিশাপ লাগবে না? পৃথিবীর সকল ধর্মগ্রন্থ বলেছে দুর্বলের প্রতি সবলের প্রতিশোধের উল্লাস ভয়ংকর। তার ফল উপর থেকে নেমে আসে।