ইরানের ফরদো পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নর্থরপ গ্রুম্যান কোম্পানীর তৈরি B-2 স্পিরিট বিমান দিয়ে MOP (ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর) বা বাঙ্কার বাস্টার বোমা দিয়ে আক্রমণ করেছে। এই আক্রমণ আমেরিকান আইন, জাতিসংঘ চার্টার, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি আইন ভঙ্গ করে করা হয়েছে। এই হামলার মাধ্যমে অনেকগুলো আইনী কাঠামো লঙ্ঘিত হয়েছে বা মার্কিন বা আন্তর্জাতিক অপরাধ করা হয়েছে।
জাতিসংঘ সনদের (United Nations Charter) ২(৪) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো সদস্য রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বা রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ করতে পারবে না—যদি না তা আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে হয় বা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ অনুমোদন দেয়। ইরান ও জাতিসংঘের একাধিক কর্মকর্তা এই হামলাকে “গভীরভাবে অবৈধ” এবং জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সশস্ত্র হামলা ও আত্মরক্ষার পূর্বসতর্কতা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে কোনো “আসন্ন হামলার” প্রকৃষ্ট প্রমাণ ছাড়া একতরফাভাবে সামরিক হামলা চালানো আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ আগ্রাসন হিসেবে বিবেচিত হয়। এই হামলার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইরানের তাৎক্ষণিক হুমকির কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি, তাই এটি অবৈধ আগ্রাসনমূলক কর্মকাণ্ড বলে বিবেচিত।
NPT (পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি) এবং আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি এজেন্সি (IAEA) এর বিধান অনুযায়ী ইরান NPT–এর সদস্য হওয়ায় তারা পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের অধিকার রাখে এবং IAEA–এর নজরদারিতে আছে। IAEA–এর নিয়ম অনুযায়ী, তদারকীকৃত শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা নিষিদ্ধ।
CPPNM (Convention on Physical Protection of Nuclear Material) এবং ICSANT চুক্তিগুলো পারমাণবিক স্থাপনার ধ্বংস বা অন্তর্ঘাতকে আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে গণ্য করে।
আন্তর্জাতিক মানবিক আইন (International Humanitarian Law) ও জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী এমন কোনো লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো যা বেসামরিক বা দ্বৈত ব্যবহারের (dual-use) আওতাভুক্ত—তা হলে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের “পার্থক্য ও অনুপাতের নীতি” লঙ্ঘিত হয়। নিরস্ত্র পারমাণবিক গবেষণাগারে হামলা করলে তা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন ও সংবিধান অনুযায়ী যুদ্ধ ক্ষমতা আইন (War Powers Resolution), ১৯৭৩ অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট সামরিক অভিযান চালাতে পারেন না কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া। ট্রাম্প প্রশাসন যদি কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই এই হামলা করে থাকে, তবে তা মার্কিন সংবিধান এবং আইন লঙ্ঘন করেছে বলে ধরা হয়।
মার্কিন আইন যেমন Iran Nonproliferation Act শুধু নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত; এতে হামলার বৈধতা নেই।
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি এজেন্সি (IAEA) এর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, যে পারমাণবিক স্থাপনাগুলো IAEA–এর নজরদারির আওতায়, সেগুলোর উপর হামলা করা যায় না। এ ধরনের হামলা IAEA–এর নিরপেক্ষতা ও পরিদর্শন ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে এবং বিশ্ব পরমাণু নিরাপত্তার জন্য ভয়ংকর দৃষ্টান্ত তৈরি করে।
এতগুলো আইন ও নীতিমালা ভঙ্গ করার পর প্রযুক্তিগত কারণে আমেরিকার এই আক্রমণ একটুও সফল হবার কথা নয়। যে স্ট্যিলথ স্ট্র্যাটেজিক বোম্বারB-2 ব্যবহার করা হয়েছে, সেই বিমান তৈরির পেছনে যে ফিলসফি বা দর্শন, সেই দর্শনই যে বাঙ্কার বাস্টার বোমা দিয়ে আক্রমণ করেছে তার কাজ না করার পেছনেরও কারণ।
ইরানের ফরদো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্লান্ট (FFEP) ইরানের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের কোম শহরের প্রায় ৩২ কিমি উত্তর-পূর্বে, ফরদো নামক একটি ছোট পাহাড়ি গ্রামের কাছে কেন করেছে। এই স্থাপনার ভৌগোলিক অবস্থান ও গঠন ইচ্ছাকৃতভাবে বেছে নেওয়া হয়েছে, যার পেছনে রয়েছে কৌশলগত, সামরিক ও প্রকৌশলগত লক্ষ্য—বিশেষ করে বাইরের আক্রমণ থেকে এটি রক্ষা করা।
খুব খেয়াল করে দেখুন B-2 স্পিরিট বিমানটি। এর সবদিকে পাহাড়ের মত ত্রিভূজাকৃতি খাঁজ কেন? এর সবদিকে পাহাড়ের মত ত্রিভূজাকৃতি খাঁজ রাখা হয়েছে যাতে শত্রুপক্ষের রেডার থেকে আসা বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ সোজা প্রতিফলিত হয়ে শত্রুর রেডার সেন্সরে ফেরত না গিয়ে বিচ্যুত হয়ে অন্যদিকে চলে যায়।
ঠিক একই দর্শন ব্যবহার করে ইরানের ফরদো পারমাণবিক স্থাপনার ভূমিতল বা টেরেইন নির্বাচন করা হয়েছে। স্যাটেলাইট থেকে নেয়া ছবিতে দেখুন পাহাড়ের কোনাকৃতি খাঁজগুলো যেগুলো B-2 স্পিরিট বিমানের খাঁজগুলোর মতই। এই পাহাড়ের খাঁজের গায়ে যদি পেনিট্রেটর বা বাঙ্কার বাস্টার বোমা দিয়ে আঘাত করা হয় তাহলে বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের মত বাঙ্কার বাস্টার বোমাটিও ভূমিতে সোজা না ঢুকে কৌনিকভাবে বিচ্যুত হয়ে যাবে। মূল স্থাপনার কোন ক্ষতি হবে না কারণ কোনভাবেই বোমাটি সোজা ভূমিতে ঢুকতে পারবে না।
তাহলে প্রশ্ন হল কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন এরকম একটি শূন্য ফলের আক্রমণ করল? এই প্রশ্নের উত্তর জটিল এবং যার বহুপাক্ষিক লক্ষ্য রয়েছে। আপাতত যা মনে হচ্ছে সেটা হল:
“আমার যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না
আমি চুল ভিজাবো না আমি বেণী ভিজাবো না
আমি এধার ওধার,সাঁতার পাথার করি আনাগোনা
যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না
আমার যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না।
আমি জলে নামব জল ছড়াব
তবু জল তো ছোঁবো না
আমি এধার ওধার,সাঁতার পাথার করি আনাগোনা
আমার যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না
আমি চুল ভিজাবো না আমি বেণী ভিজাবো না
আমি এধার ওধার,সাঁতার পাথার করি আনাগোনা
যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না।
আমি ভোগ লাগাবো তবু ভুখে মরব না
আমি রাঁধিব বাড়িব,ব্যঞ্জন বাটিব
তবু আমি হাঁড়ি ছোঁবো না
আমার যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না
আমি চুল ভিজাবো না আমি বেণী ভিজাবো না
আমি এধার ওধার,সাঁতার পাথার করি আনাগোনা
যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না।
গোঁসাই রসরাজে ভনে,শোন গো নাগরী
ও রূপে যাই বলিহারি!
আমি হবোনা সতী আমি না হবো অসতী
তবু আমি পতি ছাড়বো না
আমার যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না
আমি চুল ভিজাবো না আমি বেণী ভিজাবো না
আমি এধার ওধার,সাঁতার পাথার করি আনাগোনা
যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না
আমার যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না”
কথা ও সুর: গোসাঁই রসরাজ
কণ্ঠ: পূর্ণদাস বাউল/পার্বতী বাউল