EN
আরও পড়ুন
রাজনীতি
পলিটিক্যাল সিস্টেমস থিংকিং এর শিক্ষা
রাজনীতি
JadeWits Technologies Limited
মতামত

কেন শেষ হয় না!

সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত? - ২

সব তদন্ত কি কতৃপক্ষ শেষ করে? ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক শক্তি তাদের স্বার্থ বা ভাবমূর্তী রক্ষার জন্য তদন্তে প্রভাব বিস্তার করে বা অনেক সময় তদন্তকারী কতৃপক্ষের মোসাহেবী চরিত্র, কাপুরুষতা বা উৎকোচগ্রহণ তদন্তকে দুর্বল করে দিতে পারে বা সেটাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পারে বা তদন্ত ঝুলিয়ে রাখতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশে যেখানে তদন্তকারী কর্মকর্তারা নিজেরাই যেখানে বলেন যে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকদের বিরুদ্ধে খুনের মামলায় আসামীদের জেরা করার সাহস তাদের নেই, বিএম কনটেইনার ডিপো দুর্ঘটনায় ৫১ মৃত্যুর অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা যিনি সিইও ছিলেন তাকে জেরা করার সাহসও তারা নিশ্চই করেনি। এই ৫১ মৃত্যুতে কারও দায় পাননি তদন্তকারী কতৃপক্ষ। কিন্তু এসব বিষয় তো নতুন নয়। সারা দুনিয়াতের এসন ঘটে। অস্ত্রধারী এবং বিত্তশালী মানুষেরা সাইকোপ্যাথিক হয়ে যায় যদি তারা ক্ষমতার কাছাকাছি চলে যায়। ৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্য, জেল হত্যা, ২১শে অগাষ্ট গ্রেনেড হত্যা যারা করেছিল তাদেরও বহু বছর তদন্তকারী কতৃপক্ষ কোন প্রশ্ন করেনি। মূল প্রশ্ন হচ্ছে যাদের স্বজন হারিয়েছে, যাদের ভাই, বোন সহকর্মী হারিয়েছে তারা ভুলে যাচ্ছে কিনা। খুনীদের সাথে তারা বন্ধুত্ব করছে কিনা। বিচারহীনতাকে তারা মেনে নিচ্ছে কিনা। বিচারহীনতার বিষয়টি শুধু রাজনৈতিক হত্যাকান্ড বা খুনের ক্ষেত্রেই নয়, নিখাদ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেও হতে পারে।      

আমেরিকার লস এঞ্জেলেস থেকে হাওয়াইয়ের হনলুলু এবং নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড হয়ে অস্ট্রেলীয়ার সিডনি যাবার একটি নিয়মিত ফ্লাইট ছিল ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৮১১। ১৯৮৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী ফ্লাইট ৮১১ এর বোয়িং ৭৪৭-১২২ বিমানটি ৩৩৭ জন যাত্রী এবং ১৮ জন ক্রু নিয়ে স্থানীয় সময় ১:৫২ তে হনলুলু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করে। হনলুলু থেকে উড্ডয়ন করার ১৭ মিনিট পর বিমানটি যখন ২২ হাজার ফুট থেকে ২৩ হাজার ফুট উচ্চতায় উঠে তখন ফ্লাইট ক্রুরা তাদের পেছনে একটি জোরালো কিন্তু চাপা শব্দ শুনতে পান এবং পুরো বিমানটিকে তখন কেঁপে ওঠে। এর প্রায় দেড় সেকেন্ড পর বিমানের সামনের কার্গো দরজাটি বিষ্ফোরণের মত উচ্চ শক্তিতে উড়ে যায়। এটি এমন জোরে ছুটে বেরিয়ে গিয়েছিল যেটা বিমানের দেহ বা ফিউজলাজের একটি অংশ ছিঁড়ে বিমানের কেবিনের মেঝেতে একটি বড় গর্ত হয়ে যায়।

বিমানের প্রেশার ডিফারেন্সিয়াল এবং এরোডাইনামিক বিপুল ফোর্সের ফলে বিমানের কেবিনের মেঝেতে একটি গুহার মত তৈরী হয়ে গিয়েছিল এবং ৮ থেকে ১২ সারির জি এবং এইচ এই দশটি সিট কেবিনের মেঝে থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বেরিয়ে ছিটকে উড়ে বাইরে চলে গিয়েছিল। এই দশটি সিটে বসা আটজন যাত্রী এবং ৯এফ সিটে বসা যাত্রী সাথে সাথে বিমান থেকে ছিটকে বেরিয়ে যায় যেখানে ৮জি এবং ১২জি সিটদুটো খালি ছিল। এই দুর্ঘটনার পর বিমানটি বিমানচালকদের দক্ষতায় হনুলুলু এয়রপোর্টে অবতরণে সক্ষম হয় এবং বাকি যাত্রী এবং ক্রুরা অক্ষত থাকে।এই বিমান দুর্ঘটনার প্রথম তদন্তে আমেরিকার পরিবহন দুর্ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা এনটিএসবি তদন্ত শেষে এই সিদ্ধান্তে পৌছায় যে এই বোয়িং ৭৪৭-১২২ বিমানটির দরজার লকিং মেকানিজমটি এমনভাবে লাগানো হয়েছিল যার ফলে দরজাটি লক করা দেখালেও, সম্পূর্ণভাবে ল্যাচড এবং লকড হয়নি। এর জন্য তারা গ্রাউন্ড ক্রুদের কাজের অদক্ষতাকে দায়ী করে ফাইনাল রিপোর্ট পেশ করে যে তারা দরোজাটি লাগালেও সেটার সেটার নিরাপত্তা ল্যাচটি স্থাপন করেনি যেটা একটি বৈদ্যুতিক মোটর চালিত ব্যবস্থা। তদন্তের জন্য উড়ে যাওয়া কার্গো ডোরটিও সাগর তল থেকে তোলা হয় না। যদিও দুর্ঘটনার আগের মাসগুলিতেও এই বিমানটির সামনের কার্গো দরজা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। 

এনটিএসবির তদন্তটি অনেকটা দায়সারা গোছের ছিল যেটা অনেক প্রশ্নের জবাব দেয় না। যেমন ঐ বিমানটি এবং আরো দুএকটি বোয়িং ৭৪৭-১২২ বিমানেরই কেবল গ্রাউন্ড ক্রুরা ভুল করেন কেন? ঐ বিমানে লি ক্যাম্পবেল নামে একজন তরুণ নিউজিল্যান্ডবাসী বাড়ি ফিরছিলেন যিনি ফ্লাইট ৮১১ এর নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন। দুর্ঘটনায় লি এর মৃত্যুর পর তার বাবা-মা কেভিন এবং সুসান ক্যাম্পবেল এনটিএসবির তদন্তের ফলাফলে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তারা এটা মেনে নেন নি। তারা এর প্রতিবাদ জানালেও কতৃপক্ষ তাদের পাত্তা দেয় না। কেভিন এবং সুসান ক্যাম্পবেল তাদের সন্তানের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের খুঁজছিলেন। তদন্তের ফলাফল শুনে ও নানা তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা মনে করেছিলেন যে যাদের দায়ী করা হচ্ছে তারা তাঁদের সন্তানের মৃত্যুর জন্য দায়ী নন। তাঁরা এই তদন্ত মেনে নেননি। উক্ত বিমানের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে এবং এমনকি এনটিএসবির তদন্তের বিভিন্ন রিপোর্ট ও তথ্য চুরি করে সেইসব নথি ব্যবহার করে তাঁরা নিজেরাই তদন্ত চালিয়ে যেতে থাকেন। নিজস্ব তদন্তের ফলে তাঁরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে দুর্ঘটনার কারণটি কোনভাবেই গ্রাউন্ড ত্রুদের মানব ত্রুটি নয়, বরং বোয়িং ৭৪৭-১২২ বিমানের বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং এর ত্রুটি এবং এর সাথে বিমানের কার্গো ডোর-ল্যাচিং মেকানিজমের একটি ত্রুটিপূর্ণ ডিজাইন জড়িত। এর পর তাঁরা নিরাপত্তা বোর্ডের কাছে তাদের দুর্ঘটনা তত্ত্ব উপস্থাপন করেন। এরপর এনটিএসবি শেষ হয়ে যাওয়া হওয়া তদন্তটি আবার উজ্জিবিত করে এবং সাগর তলে রোবোট নামিয়ে উক্ত কার্গো ডোরটি তুলে আনা হয় এবং দ্বিতীয় বার বিস্তারিত তদন্তে প্রমাণিত হয় যে কেভিন এবং সুসান ক্যাম্পবেলের দাবী সঠিক। 

শুধু এটিই নয়, সারা দুনিয়ায় তদন্তে অবহেলা বা তদন্ত ভুল দিকে নেবার অনেক উদাহরণ আছে যেখানে সাধারণ মানুষ বা ভিক্টিমের আত্মীয়, স্বজন, বন্ধু বা বা সহকর্মীরা তদন্ত এগিয়ে নেয় বা হাল ছাড়ে না:  

টেরি মিসি হত্যাকান্ড ২০১৬: আমেরিকার টেরি মিসি বেভারস ছিলেন একজন ফিটনেস প্রশিক্ষক যাকে ২০১৬ সালের এপ্রিলে টেক্সাসের একটি চার্চে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে পুলিশ তদন্তে অতি ধীরগতিতে অগ্রসর হচ্ছিল এবং মামলাটি অমীমাংসিত রয়ে গিয়েছিল। কিন্তু টেরির বন্ধুরা এবং অনলাইন কিছু উৎসাহী ব্যক্তি এই মামলায় তদন্ত নিজেরা করতে শুরু করে। তারা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এবং সম্ভাব্য সন্দেহভাজনদের নিয়ে অনলাইনে আলোচনা শুরু করে। তাদের প্রচেষ্টা সন্দেহভাজন ব্যক্তির হাঁটাচলা, আচরণ এবং সিসিটিভি ফুটেজে দেখা ব্যক্তিদের মধ্যে তুলনার মাধ্যমে একজন সম্ভাব্য সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করে। অবশেষে, সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
আল কাইট হত্যাকান্ড ২০০১: আল কাইট ছিলেন একজন ওহাইওতে বাস করা ব্যবসায়ী যিনি ২০০১ সালে তার বাড়িতে খুন হন। প্রাথমিক পুলিশি তদন্ত সত্ত্বেও মামলাটি বছরের পর বছর ধরে অমীমাংসিত ছিল। আল কাইটের মেয়ে জেসিকা ম্যাককর্ড তদন্তে অগ্রগতি না থাকার কারণে হতাশ হয়ে তার বাবার হত্যার তদন্ত করার ভার নিজেই নিয়ে নেন। জেসিকা নানা তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেন এবং নিজেই তদন্ত চালিয়ে যান যা তার মধ্যে এই বিশ্বাস এনে দেয় যে যে তার সৎ মা এবং সৎ ভাই এই হত্যার জন্য দায়ী। তিনি পুলিশের কাছে তার তদন্তের ফলাফলগুলি শেয়ার করেন এবং পুলিশ অবশেষে মামলাটি পুনরায় চালু করে এবং তার সৎ মা এবং সৎ ভাইকে গ্রেপ্তার করে যারা হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল।

পেগি হেট্রিক হত্যাকান্ড ১৯৮৭: পেগি হেট্রিককে ১৯৮৭ সালে ফোর্ট কলিন্স, কলোরাডোতে খুন করা হয়েছিল। প্রাথমিক পুলিশি তদন্ত সত্ত্বেও মামলাটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে স্থবির ছিল। জোডি লরেন্স-টার্নার নামে একজন স্থানীয় সংবাদপত্রের প্রতিবেদক এই মামলায় গভীর আগ্রহ দেখান এবং নিজেই তদন্ত শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন সাক্ষীদের সাক্ষাৎকার নেন, কারন প্রমাণ পর্যালোচনা করেন এবং গবেষণা পরিচালনা করেন। তার প্রচেষ্টায় বিষয়টি নিয়ে অনেক নতুন তথ্য আবিষ্কার হয় এবং তিনি তার ফলাফলগুলিকে একটি সিরিজ নিবন্ধে উপস্থাপন করেন। অবশেষে, লরেন্স-টার্নারের লেখা নিবন্ধগুলির দ্বারা উত্পন্ন মনোযোগ মামলার পুনঃপরীক্ষার জন্য উদ্বুদ্ধ করে, যার ফলে একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার এবং দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।

আনা পলিটকভস্কায়া হত্যাকান্ড (২০০৬): আন্না পলিটকভস্কায়া একজন রাশিয়ান সাংবাদিক ছিলেন যিনি মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং রাজনৈতিক দুর্নীতির উপর তার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য পরিচিত ছিলেন। ২০০৬ সালের ৭ অক্টোবর তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের সিঁড়িতে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। মামলাটি তদন্তে সরকারী প্রচেষ্টা অপর্যাপ্ত বলে মনে হলে তার সহকর্মী এবং বিশেষ করে সাংবাদিকরা নিজেরাই তদন্ত শুরু করেন। তাদের অধ্যবসায় এবং লেগে থাকা মামলাটিকে জনসাধারণের নজরে রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে পলিটকভস্কায়ার হত্যাকান্ড নিয়ে দ্বিতীয়বার বিচার শুরু হয়। হত্যার সূত্রে ধৃত তিন ব্যক্তিকে আদালত মুক্তি দিয়েছিল প্রথমবার। কিন্তু পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট সে রায় নাকচ করে দেয়ায় নতুন করে বিচার শুরু হয়। বিচারাধীন সন্দেহভাজন তিন ব্যক্তির সবাই এই হত্যাকান্ডে সহযোগিতা করার দায়ে অভিযুক্ত হয়। কিন্তু যে-ব্যক্তি গুলি করেছিল তার কোন হদিশ বের করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ৷ এবং কার নির্দেশে এই হত্যাকান্ড ঘটে তারও পরিচয় শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয় তারা। দুই চেচেন ভাই জেব্রাইল ও ইব্রাহিম মাখদুমভ হত্যাকারীর গাড়ির চালক হিসেবে কাজ করার জন্য অভিযুক্ত হয়। তাদেরই আর এক ভাই রুস্তমই আসল হত্যাকারী বলে সন্দেহ করা হয়। ধারণা করা হয় সে পশ্চিম ইউরোপের কোন জায়গায় পালিয়ে আছে। হত্যাকান্ডের লজিস্টিক সহায়তা দেয়ার অভিযোগ আনা হয় পুলিশের একজন প্রাক্তন তদন্তকারীর বিরুদ্ধে।

ড্যাফনে ক্যারুয়ানা হত্যাকান্ডে ২৯১৮: ড্যাফনে ক্যারুয়ানা গ্যালিজিয়া ছিলেন মাল্টার এক অনুসন্ধানী সাংবাদিক যিনি মাল্টায় দুর্নীতি ও অর্গ্যানাইজড ক্রাইমের নানা তথ্য প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে একটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন। তার হত্যাকাণ্ড জাতিকে হতবাক করেছিল। যখন দেখা গেল যে কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট উদ্দোগ নিয়ে তদন্ত করছে না তখন তার সহকর্মীরা এবং পরিবারের সদস্যরা তাদের নিজস্ব তদন্ত শুরু করেন। তাদের প্রচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবশেষে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে সন্দেহ এমন বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বরিস নেমতসভের হত্যাকান্ড ২০১৫: বরিস নেমতসভ ছিলেন একজন বিশিষ্ট রাশিয়ান বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক। তাকে ২০১৫ সালে ক্রেমলিনের কাছে গুলি করে হত্যা করা হয়। সরকারী তদন্ত পরিচালনা হয় অতি ধীর গতিতে এবং স্বচ্ছতার অভাবের জন্য সেটি সমালোচিত হয়। নেমতসভের সহকর্মী এবং সমর্থকরা তাদের নিজস্ব তদন্ত পরিচালনা করেন, নানা তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেন এবং নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করেন। তাদের প্রচেষ্টা সরকারী আখ্যানের অসঙ্গতি এবং ফাঁক উন্মোচনে অবদান রাখে।

আহমেদ টিমল হত্যাকান্ড ১৯৭১: আহমেদ টিমল ছিলেন একজন দক্ষিণ আফ্রিকান বর্ণবাদ বিরোধী অ্যাকটিভিস্ট যিনি ১৯৭১ সালে পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন মারা যান। পুলিশ দাবি করেছিল যে তিনি একটি জানালা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু তিমলের পরিবার এবং সহকর্মীরা নিশ্চিত ছিলেন যে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। কয়েক দশক পরে, ২০১৭ সালে তদন্তটি পুনরায় চালু করা হয় এবং আইনজীবী, গবেষক এবং অ্যাক্টিভিস্টদের একটি দল সত্য উদঘাটনের জন্য কাজ শুরু করে। তাদের প্রচেষ্টার ফলে একজন বিচারক রায় দেন যে টিমলকে প্রকৃতপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার নিরাপত্তা পুলিশই হত্যা করেছিল।

সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে আমরা যেন শুধুই পুলিশি (র্যাবও পুলিশ) তদন্তের দিকে চোখ মেলে বসে আছি। একথা কি পরিষ্কার নয় তাদের মাধ্যমে এই তদন্ত এগোবে না? ভাই খুন হলে বোন খুন হলে সন্তান খুন হলে মানুষের ঘুম হারাম হয়ে যায়। আমরা আমাদের বর্তমান সমাজে দেখছি কারো খুনে কারো ঘুম আর হারাম হয় না। হয় মানুষ পুলিশ র্যাবের দিকে চেয়ে থাকে অথবা পরকালের দিকে। আঠারো কোটির দেশে একজনও কি আছে যার বারো মাস সাত দিন চব্বিশ ঘন্টার চিন্তা এই খুনের রহস্য উন্মোচন? একজন থাকলেও এই হত্যার তদন্ত শেষ হতে পারত। খালেদা জিয়া দশ বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তার স্বামীর খুনের বিচার কিন্তু হয়নি। খুনের বিচার চাইতে হয় - অন্তত একজনকে মরণপন করে - এত সাংবাদিক কিন্তু সাগর রুনির জন্য সেই একজন কোথায়?

JadeWits Technologies Limited
সর্বশেষপঠিতনির্বাচিত

আমরা আমাদের সেবা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করি। আমাদের কুকি নীতির শর্তাবলী জানার জন্য অনুগ্রহ করে এখানে ক্লিক করুন। কুকি ব্যবহারের জন্য আপনি সম্মত হলে, 'সম্মতি দিন' বাটনে ক্লিক করুন।