EN
আরও পড়ুন
প্রকৃতি ও সুরক্ষা
বিজ্ঞানের উপনিবেশবাদ ও তার দেশী তাবেদারেরা -২
প্রকৃতি ও সুরক্ষা
বিজ্ঞানের উপনিবেশবাদ ও তার দেশী তাবেদারেরা -১
ধর্ম ও দর্শন
JadeWits Technologies Limited
ধর্ম ও দর্শন

শহুরে শিক্ষিত দালালদের শক্তিশালী করার কৌশল

যৌতুক, সতীদাহ নিয়ে কুৎসা: মাটির ধর্ম ও সংস্কৃতিকে হেয় করার অস্ত্র

মোটামুটি দীর্ঘ একটা ইউরোপ ভ্রমনের পর আর মাত্র দুদিন পরই আমার ফিরতি ফ্লাইট। আমার ইউরোপীয় (দেশটির নাম বলছি না কারন তাদের অনেকেই ফেসবুকে আছে) বন্ধু, যার ফ্লাটে আমি আছি কয়েকদিন, সে আমাকে তার বাসার একসেট চাবী দিয়ে রেখেছে। ওই দিন বাসা থেকে বের হবার প্রধান দরোজায় সে একটি স্টিকি নোটে লিখে রেখে গেছে সন্ধায় তার এক বান্ধবী আমাদের ডিনারের আমন্ত্রন দিয়েছে, আমি যেন বিকেলের মধ্যেই ফিরি, কারন মেয়েটার বাসায় যেতে সময় লাগবে সন্ধার ট্রাফিকে।

ঘন্টাখানেক ড্রাইভের পর যে বাসাটায় পৌছালাম সেটাকে মোটামুটি একটা পোড়োবাড়ী বলা যেতে পারে। বিশাল বিশাল কক্ষ কিন্তু মনে হয় যে কোন সময় ইট প্লাস্টার খুলে পড়বে। এ বাড়িতে আমার বন্ধুর বান্ধবী থাকে আর থাকে তার সাথে আরও দুটি মেয়ে। একটি মেয়ে চল্লিশের মাঝামাঝী আর আমার বন্ধুর বান্ধবী ও বাকিজন ত্রিশ এর কাছাকাছি। তিনজনই উন্নয়নকর্মী যার মধে আমার বন্ধুর বান্ধবীটি বহুদিন ভারতে ছিল, সে আমাকে হিন্দীতে স্বাগতম জানালো যদিও সে হিন্দী বলতে পারে না। তিনজনের সবাই ইংরেজী বোঝে তবে বয়ষ্কজন তেমন ভাল বলতে পারে না। সে ছিল প্রধানত শ্রোতা।

টিপিক্যাল ইউরোপিয় ডিনার যেখানে পনির, ওয়াইন আর হাবিজাবি দিয়েই দীর্ঘ সময় গল্প আড্ডা চলে যতক্ষন ভালরকম ক্ষুধা না লাগে। বয়ষ্কজন উঠে এক সসপেন পাস্তা সিদ্ধ হতে দিয়ে এল আর আমাকে বলল কোন কিছু খাবার বিষয়ে আমি কোন বিধিনিষেধ মানি কিনা। আমি বললাম কিছু পোঁকাওয়ালা পনির (Casu marzu) আর দুর্গন্ধ কলিজা পেস্ট (Chicken Liver Pâté) ছাড়া আর কোন কিছুতে আপত্তি নাই। সিংহভাগ ইউরোপিয় তরূণ তরুণীদের মধ্যে এই জিনিষটি সবচেয়ে ভাল, পোশাক খাবার দাবার নিয়ে আড়ম্বরী কম। গল্প আর হাসি ঠাট্টা করাটাই যেন মুল। যদিও সে সব গল্পকথায় কোন ভার থাকত না। আড্ডার সময় টিভি পত্রিকার সদ্য গড়া হাওয়ায় ভেসে বেড়ানো হালনাগাদ সব মেকি অ্যাঞ্জেলিক মুখোশগুলো যার যেমন খুশি পরে নিত। তারপর মনোজগতে যেমন খুশি সাজো’র হুর পরী সেজে সবাই কাউকে না কাউকে ডেভিল বানিয়ে শাপশাপান্ত করত।
 
সেই সন্ধার গল্পগুলো শুরু হয় তেমনই খুব ভালমানুষিকতায়। আমি কি করি, ওরা কে কি করে। আমরা কে কত ভাল কিছু করছি, এইসব প্রশংসা স্তুতিতে। যেহেতু মেয়ে তিনটাই উন্নয়নকর্মী আর আমরা ছেলে দু’জনই প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ব্যবসায় জড়িত, আমরা একটু দমেই যাই। কিন্তু যত বেশী ওয়াইনে চুমুক পড়ে, রাতের অন্ধকার যত বাড়ে, স্তুতি প্রসংশা থেকে আলোচনাগুলো তত বেশী ক্ষোভ আর কুৎসায় পরিণত হতে থাকে। ক্ষোভ আর কুৎসা যত বাড়তে থাকে, তার লক্ষ্য যেন স্থান ও কাল – উভয় মাত্রাতেই আরও বিস্তৃতি লাভ করতে থাকে। ভারতে কাজ করা মেয়েটিই প্রধাণ বক্তা হয়ে যায়। ভারতে কাজ করতে গিয়ে ভারতীয় মেয়েদের সে কতরকম শৃংখল নিষেধাজ্ঞা দেখেছে সেগুলো আমরা শুনি। শুনি বিয়ের আগে প্রতিটি নারীকে কেমনভাবে যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হয়। শুনি বিয়ের পর যৌতুক নিয়ে কিভাবে প্রতিটি মেয়েকে নির্যাতন করা হয়। সেগুলো শেষ হলে তারপর শুনি অতীতে ভারতীয় পুরুষেরা কিভাবে একে একে মেয়েদের সতিদাহ প্রথায় জীবন্ত পুড়িয়ে মারত।

আড্ডা শেষ হলে আমরা দুই অপরাধী পুরুষ জগতের জীবিত মৃত সব পুরুষের অপকর্মের দায় নিয়ে ফেরার পথ ধরি। ফেরার সময় শুধু আমার বন্ধুটি বলে “উই আর মেন মাই ফ্রেন্ড, মেন হ্যাড ব্যাড হিস্টোরি, উই হ্যাভ টু টেক ইট”। আমার মনে সন্দেহ ছিল এই তিন জনের একজন অন্তত তার শয্যাসঙ্গী ছিল কোন এক সময়, একথায় সন্দেহটা আরও দৃঢ় হয়। কিন্তু আমার মন ওর বক্তব্য মানতে চায় না। আমার মনে হয় শহুরে শিক্ষিত হবার আগে, মানুষে মানুষে, পরিবারে, গোত্রে, গ্রামে ভালবাসা – সহমর্মীতা আরও প্রকট ছিল, কারন তখন মানুষের কাছে কাছের মানুষই ছিল ছিল বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন আর পুরষ্কার। প্রসংশা স্তুতির জন্য তখন রাস্তায়, সাগর সৈকতে, শপিং মলে, ফেসবুকে  পাবলিক ডিসপ্লের সুযোগ ছিল না।  আমি ছবি তুলতে আজকের বাংলায় যতগুলো গ্রামে গিয়েছি, দেখেছি গ্রামটা যত প্রাচীন, মানুষগুলো তত ভাল, তত মায়া আর বিশ্বাস তাদের মনে।
 
পুরোনো গ্রামগুলোতে, বিশেষ করে হিন্দু গ্রাম গুলোতে একাকী যুবতি স্ত্রীরা ক্যামেরা হাতে অচেনা পুরুষ দেখে কোন সন্দেহ সংকোচ করেনি। এগিয়ে এসেছে, বলেছে দাদার বাড়ী কোথায়? এই ভর দুপুরে রোদে কত কষ্ট করছেন, আসেন ছায়াতে একটু বসেন বলে ঘরের ভাঙা চেয়ার বা মোড়াটা আঁচল দিয়ে মুছে বসিয়েছে। তারপর পাশের বাড়ীর কোন কিশোরকে ডেকেছে একটা ডাব পেড়ে দিতে। একটু পরিচয় হলে বৌ-ঝিরা কয়েকজন থাকলে ঠাট্টা করতেও ছাড়েনি। দাদা বিযে করেছেন কিনা। ছেলেমেয়ে আছে কি না। কেউ ঠাট্টা করে বলেছে এত ঘুরে বেড়ালে বাচ্চা করার সময় কোথায়, বলে সবাই হেসে উঠেছে। এইসব সরলতা আর বিশ্বাস এমনিতে হয় না। বহুদিনের জেন্ডার ট্রাস্ট সমাজে থাকতে হয়। তা না হলে মন চাইলেও মুখ ফোটে না। অতীত মন্দ অভিজ্ঞতার ট্রমা, সন্দেহ আর অবিশ্বাসে বাস করে যারা তারা শুধু নিজের শরীর ঢাকে আর অচেনা পুরুষ দেখলে মনে করে ধর্ষক।
 
আমার মনে হয়েছিল আমাদের প্রাচীন সমাজ সম্পর্কে এইসব ঢালাও অভিযোগ অন্যায়। আমাদের মৃত পিতা প্রপিতামহ ও তাদের পুর্বসূরীদের তাদের অনুপস্থিতিতে অপবাদ দিয়ে কালিমালিপ্ত করা অপরাধ আর ধৃষ্টতা। কেন আমরা ভাবি আমরা ভাল, তারা খারাপ ছিল?
 
ফিরে এসে খোঁজার চেষ্টা করি। আসলেই কি এত খারাপ ছিল ভারতবর্ষ? পেয়ে যাই অনেক তথ্যা। যেমন যৌতুক। যৌতুক কখনই নারী নির্যাতনের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় নি। ভারতবর্ষে সমতলে যেহেতু কৃষিনির্ভর সমাজ ছিল এবং ছিল যৌথ পরিবার। অর্থাৎ দাদার অধীনে বাবা চাচারা সব একসাথে জমি চাষ করত এবং একসাথে ফসল তোলা হত, এক বাড়িতে এক হাঁড়িতে রান্না হতো। সেখান থেকে কোন মেয়ের যদি বিয়ে হয়ে যেত তখন সে তার স্বামীর সাথে স্বামীর যৌথ পরিবারে বাস করতে যেত। যেহেতু যৌথ কৃষিকাজ তাই মেয়ের বাবার পরিবারের জমিতে মেয়েটার যে অংশ সেটা মেয়েটাকে জমি হিসাবে দেওয়া যেত না। মেয়েটা যাতে পিতার জমির ভাগ থেকে বঞ্চিত না হয় সেই জন্য তার স্থাবর সম্পত্তির অংশ (জমি, বাড়ি) অস্থাবরে রুপান্তরিত করে (গহনা, টাকা) বিয়ের সময় বোনকে ভাইয়েরা দিয়ে দিত। এটাই যৌতুক। নারীর প্রতি এই সুবিচারের প্রথাকেই শিক্ষিত লোকজন নারী নির্যাতন হিসাবে এখনও ভুল করে। 

তেমনই সতীদাহ প্রথা। এটিও আর একটি ভ্রান্ত দায় চাপানো। প্রাচীন ভারতবর্ষে সতীদাহ বলে কিছু ছিল না। মৌলিক রামায়ন মহাভারতে সতীদাহের কোন বর্ণনা নাই। স্বামীর মৃত্যুর পর পাণ্ডুর দ্বিতীয়া স্ত্রী মাদ্রীর মত দু’একজন ভিন্ন কারনে আত্মহনন ছাড়া রামায়ন মহাভারতের সব মৃতদের স্ত্রীরাই জীবিত ছিল। পরবর্তীতে ক্ষত্রীয়দের দ্বারা শুধুমাত্র কিছু গোত্রের রাজ পরিবারে এর প্রচলন শুরু হয়। ক্ষত্রীয় অর্থ শাসক ও সামরিক বর্ণ। যারা অত্যন্ত জ্ঞানী সক্ষম ও নৃশংস ছিল আচারে। ক্ষত্রীয়দের সেই সব রাজ পরিবারে নারী নিজে প্রেমে পড়ে বিবাহের জন্য রাজা বা রাজপুত্রের কাছে নিজেকে সমর্পন করত। নারীর এই মুক্ত প্রেম এলিট পরিবারগুলোতে প্রচলিত হতে থাকে। কিন্তু সমস্যা হয় কিছুদিন গেলে যখন সেই সম্পর্কে বিরোধ বাধে তখন ঐ নারীগণ বিষ প্রয়োগ করে স্বামীকে হত্যা করে অন্য ক্ষমতাশালী পুরুষকে আবার প্রেম নিবেদন করতে থাকে। 

এটা ক্রমেই বাড়তে থাকায় এই বিপদ থেকে মুক্ত হবার জন্যই সেইসব রাজ্য ঘোষণা করে যে কোন নারী যদি কোন পুরুষের কাছে নিজেকে সমর্পণ করে তবে ঐ পুরুষের মৃত্যু হলে হয় সে ঐ পুরুষের সাথে সহমরণে যাবে অথবা সে তার জাতীচ্যুত হবে (নতুন কাউকে বিয়ে করতে পারবে না)। সে সময় অনেক রাজারই একাধীক স্ত্রী থাকত, দেখা যেত নিজের গৌরবের জন্যই কোন কেন নারী তার প্রেম যে সত্য ছিল সেটা প্রমাণে আত্মহনন বেছে নিত।
  
আশ্চর্য্য হচ্ছে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে পুরো ভারতবর্ষে সতীদাহের সংখ্যা খুব কম, হাতে গোনা মাত্র। কিন্তু বৃটিশরা আসার পরে বিশেষ করে বাংলায়, এমনকি শহুরে সমাজে কোলকাতায় সেটা ব্যপকভাবে বেড়ে যায়। এম ভি পি কানের বিশাল আট ভল্যিউম হিস্ট্রি অব ধর্মশাস্ত্রে যে পরিসংখ্যান আছে সেটিতে দেখা যায় ১৮১৫ ইং সালে বাংলায় (যা তখন বারাণসী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল) সতীদাহ হয়েছিল ৩৭৮টি। সেটি বেড়ে ১৮১৮ তে হয় ৮৩৯টি। ১৮১৫ থেকে ১৮১৮ পর্যন্ত মোট হয়েছিল ২৩৬৬টি সতীদাহ যার মধ্যে কোলকাতাতেই সতীদাহ হয়েছিল ১৮৪৫টি। সর্বোচ্চো সময়ে যা ছিল ৪,৪৫,০০০ মানুষের জন্য একটি সতীদাহ।

প্রাচীন, গ্রামীন ও অশিক্ষিত সমাজে নয় যেখানে ধর্ম আবেগ প্রবল, বরং শিক্ষিত শহুরে আধুনিক সমাজ,বৃটিশ কোলকাতায় সতীদাহ হাজারগুন বেশী কেন? কানের মতে এর কারন হিন্দু ‘দায়ভাগ’ আইনের কঠোরতা। হিন্দু উত্তরাধীকার আইন দুটি ধারায় বিভক্ত: দায়ভাগ ও মিতাক্ষরা। বাংলায় দায়ভাগ আইন প্রচলিত ছিল। এই আইন অনুসারে স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রী মৃত স্বামীর সমস্ত সম্পত্তির নি:শর্ত অধিকার পায় এমনকি স্ত্রী নি:সন্তান হলেও। ইংরেজ আমলে ইংরেজরা এই দায়ভাগ আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ শুরু করে। শহুরে শিক্ষিত, বিশেষ করে কোলকাতার ব্যবসায়ী সমাজ সম্পত্তি রক্ষার জন্য ধর্মের দোহাই দিয়ে, স্বামীর আত্মিয়রা সদ্য বিধবাদের স্বর্গের লোভ বা ভয় দেখিয়ে সতীদাহে যেতে প্ররোচিত করত। তাই এই হার শহরে এত বেড়ে গিয়েছিল। কথিত আছে ভারতে বৃটিশ গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ও তার লোকজন সতীদাহের খবর শুনলে সেখানে গিয়ে ঘুষও নিতেন (ছবি দেখুন)। দুর্নীতির কারনে হেস্টিংসকে ইমপিচও করা হয়েছিল।
ওয়ারেন হেস্টিংস ও তার লোকজন সতীদাহের খবর শুনলে সেখানে গিয়ে ঘুষও নিতেন 
পরিহাস হচ্ছে যে পশ্চিমাদের প্রভাবে ক্ষত্রীয়রা (আর্যরা) নিজেদের শ্রেষ্ঠতর ভাবত, তারাই তাদের নিজেদের নারীদের রাক্ষুসী লোভকে সামলাতে সতীদাহের মত নৃসংশ প্রথা চালু করে। কয়েক হাজার বছর পরে সেই পশ্চিমাদের দ্বারা প্রভাবিত শিক্ষিত ব্যাবসায়ী সমাজ সেই প্রথাকে সম্পত্তি বাঁচানোতে আবার ব্যবহার করা শুরু করে। আর ঐ পশ্চিমারাই আবার ফিরে আমাদের সেই দোষে দোষী করে। আর আমরাও সেটির মাত্রা বিচার না করে আমাদের পিতা প্রপিতামহদের দোষ দেই অশিক্ষিত বর্বর বলি।
 
এটি শুধু বিদেশীরা নয়, তাদের চেয়েও বেশী দেশী শিক্ষিতরা বিশেষ করে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পেশাগত শিক্ষায় যারা উচ্চশিক্ষিত তারা বেশী করে থাকে কারন তারা সেই সামাজীক বিচ্ছিন্নতায় ভুগে থাকে যা তাদের ক্ষীণ আত্মমূল্যের ব্যক্তি করে তোলে। এর সাথে স্বল্প মেধার নারীবাদী, মানবাধীকারকর্মী, বিদেশের সাথে যাদের আর্থীক যোগ ভাল। তারা বোঝে না যে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধী থেকে ‘তোমার অতীত হলো হীন, নৃশংস, জংলী’ দাস প্রথার এই ট্যাকটিক ছড়ানো হয় যেটা ডি সোশালাইজেশনের একটা অস্ত্র যাতে তারা আগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদীদের স্থানীয় স্বার্থ রক্ষাকারীতে পরিণত হয়।
     
মনেবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে যদি বলি, সতীদাহের মত নৃসংশ প্রথা সে সমাজেই থাকতে পারে যে সমাজে এমপ্যাথি শুন্য প্রায়। এমপ্যাথি শুন্য কোন গ্রামীণ সমাজ চলতে পারে না। শহুরে শিক্ষীত ও উচ্চ ক্ষমতার উচ্চ অর্থনীতির সামরিক ব্যবসায়ী সমাজই একমাত্র এমপ্যাথিহীন টিকে থাকতে পারে। বহির্শক্তির প্রভাব আর পুঁথীগত শিক্ষা সমাজে সব সময় বিচ্ছিন্ন মানসিক বিকারগ্রস্থদের শক্তিশালী করে। তারাই পরিণত হয় ঘরের শত্রু বিভীষণে যারা হাজার হাজার বছরে মাটির সংস্কৃতিতে সৃষ্ট প্রেম প্রীতি বন্ধনকে ধ্বংশ করে তুচ্ছ কারণে নৃশংসতা আনয়ন করে। তারাই ছড়ায় গুজব আর প্রোপাগান্ডা আমাদের মৃত পূর্বপুরুষদের দায়ী করে যারা আমাদের জন্যই তাদের জীবন উৎসর্গ করে গেছে।

© Sirajul Hossain

JadeWits Technologies Limited
সর্বশেষপঠিতনির্বাচিত

আমরা আমাদের সেবা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করি। আমাদের কুকি নীতির শর্তাবলী জানার জন্য অনুগ্রহ করে এখানে ক্লিক করুন। কুকি ব্যবহারের জন্য আপনি সম্মত হলে, 'সম্মতি দিন' বাটনে ক্লিক করুন।